ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবেশবান্ধব শিল্প ও শ্রমিকদের মরণদশা

বারবার খুবই সাধারণ দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হচ্ছে পাটকল শ্রমিকদের। দাবি আর কিছু না, মজুরি নিয়মিত পরিশোধ এবং সেই সঙ্গে পাটকলগুলো যথাযথভাবে পরিচালনা করা। সর্বশেষ এবারে দাবি পূরণ না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভুক্ত অসুস্থ শ্রমিকরা শেষ ব্যবস্থা হিসেবে অনশন শুরু করেন। অনশনের ধকল নেয়ার মতো শারীরিক অবস্থা তাঁদের কারো নেই। এ অনশনে গিয়ে দুজন দক্ষ পাটকল শ্রমিক অকালে মৃত্যুবরণ করলেন। তাঁদের সম্পর্কে যতটুকু জানা যায়, মজুরির দাবি নিয়ে তাঁরা যখন মারা গেলেন তখন বহু মাসের মজুরি না পেয়ে তাঁরা ঋণগ্রস্ত ছিলেন। সবার সম্মুখে মরলেন বলে আমরা তাঁদের সম্পর্কে জানতে পারলাম। কিন্তু মাসের পর মাস মজুরি না পেয়ে অনাহারে অসুস্থতায় মানসিক চাপে কতজন মৃত, অর্ধমৃত; কত পরিবারে কেয়ামত নেমেছে সে হিসাব আমাদের কাছে নেই। এর পরও এবারের আন্দোলনের পরও তাঁরা প্রতারণা ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতির শিকার হতে যাচ্ছেন। কারণ সরকারের নীতি এ শিল্পরক্ষা বা বিকাশের বিপরীত।

গত দুই দশকে বাংলাদেশে শিল্প খাতের দ্রুত বিকাশ হয়েছে। গার্মেন্টস ছাড়াও ওষুধ, রসায়ন, প্লাস্টিক, জুতা, সিমেন্ট, সিরামিকস, ইলেকট্রনিকস, খাদ্যসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বিনিয়োগ হয়েছে। তবে এসব শিল্পের বিকাশ যথাযথ নিয়ম মেনে হয়নি, কারখানা করতে গিয়ে বন উজাড় হয়েছে, জলাভূমি ভরাট হয়েছে, কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাও যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কারখানা বর্জ্য অবাধে নদী-নালা খাল-বিল দূষণ করছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরে অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বুড়িগঙ্গা নর্দমায় পরিণত হয়েছে, অন্য অনেক নদীই সেই পথে। শ্রমিক মজুরি, জীবন ও কাজের নিরাপত্তা কোনো কিছুই ন্যূনতম মানে পৌঁছাতে পারেনি। ব্যক্তি মুনাফার লোভে উন্মাদ হতে পারে, কিন্তু এসব বিষয় নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের, শ্রম ও পরিবেশ অধিদপ্তরের। কিন্তু তদারকির এসব প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর দুর্বল রাখা হয়েছে। কারখানা পরিদর্শকের অভাব প্রকট। এর কারণে গড়ে উঠেছে অনেক অবৈধ কারখানা কিংবা বৈধ কারখানার অবৈধ তত্পরতা। আবাসিক এলাকায় মজুদ করা হচ্ছে বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য, অবৈধভাবে চলছে প্লাস্টিক, ফ্যানসহ নানা কারখানা। গত কিছুদিনে তার ফলাফল আমরা দেখলাম নিমতলী, কেরানীগঞ্জ, গাজীপুর…। কারখানার শ্রমিকরা মারা যাচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন এলাকাবাসী। এসব অকালমৃত্যুর পর সরকার থেকেই স্বীকার করা হচ্ছে এগুলো অবৈধ ছিল, কিন্তু বছরের পর বছর অবৈধ তত্পরতা যে চলল তার দায়িত্ব স্বীকার করে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, তদারকি ব্যবস্থা ঠিক করার কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি।

এসব বিষয়ে কথা বলতে গেলেই সরকার-কোম্পানি থেকে বলা হয়, উন্নয়ন করতে গেলে, শিল্পায়ন করতে গেলে পরিবেশের ক্ষতি হবেই! কথাটা ভুল। প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশকে অর্থাৎ মুনাফার ওপর মানুষের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে গুরুত্ব দিলে প্রথমত শিল্পের পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি অনেকখানি কমানো যায়, আর দ্বিতীয়ত, পরিবেশবান্ধব শিল্পকে গুরুত্ব দিলে দুই ক্ষেত্রেই ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। বাংলাদেশে মুনাফা উন্মাদনা, সরকারের জনস্বার্থের প্রতি চরম অবজ্ঞা এবং দুর্নীতি-কমিশননির্ভর সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া জোরদার থাকায় এ দুটির কোনোটিই হয়নি। বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব শিল্পের একটি বড় দৃষ্টান্ত পাট শিল্প। বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর নীতিকাঠামো অন্ধভাবে অনুসরণ করায় এ শিল্পই এখন সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থায়।

অথচ পাট ও পাট শিল্পে বাংলাদেশের তুলনামূলক সুবিধার ক্ষেত্র বহুবিধ। আবার এর গুরুত্ব এদেশের অর্থনীতির একটি শক্ত টেকসই মাজা দাঁড় করানোর জন্য অপরিহার্য। পাট কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক বিশাল শিল্পবিপ্লবের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পাট ও পাট শিল্প এখন সবচেয়ে সংকটজীর্ণ অবস্থায়। তুলনামূলক সুবিধার দিকগুলো সংক্ষেপে নিম্নরূপে বলা যায়: (১) উত্কৃষ্ট মানের পাট উৎপাদনের উপযোগী মাটি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ; (২) কয়েক দশকে গড়ে ওঠা অভিজ্ঞ ও দক্ষ শ্রমশক্তি; (৩) আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি। অভ্যন্তরীণ বাজারেও এর বিস্তারের অসীম সম্ভাবনা; (৪) পরিবেশ অনুকূল হওয়ায় পাট শিল্প বিকাশের সামাজিক ও পরিবেশগত ব্যয় প্রায় শূন্য। অন্য বহু শিল্পপণ্যই পরিবেশ ও সামাজিক উচ্চ ক্ষতির কারণ; (৫) পাট রফতানিতে বিদেশী মুদ্রা আয় শতভাগ, যেখানে গার্মেন্টসে তা ৫০-৬০ ভাগ; (৬) পাট একসঙ্গে কৃষি ও শিল্পে যুক্ত থাকায় দুই খাতের বিকাশই এর ওপর নির্ভরশীল; (৭) পাট ও পাটজাত দ্রব্য দুই ক্ষেত্রেই বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং (৮) পাট বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত।

যেখানে পাট ও পাট শিল্প বিকাশে বাংলাদেশের এতসব অনুকূল উপাদান আছে এবং যেখানে পরিবেশ অনুকূল বলে পাটজাত পণ্যের ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে, সেখানে এ শিল্প বিকাশের কোনো সমন্বিত উদ্যোগ না নিয়ে ক্রমে কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কাজে বিভিন্ন সরকারের একনিষ্ঠ তত্পরতার এ পুরো অবিশ্বাস্য চিত্রটি বুঝতে গেলে আমাদের প্রতিষ্ঠিত উন্নয়ন দর্শন এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন কৌশলে বাংলাদেশের অবস্থানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পাট শিল্প বিনাশমুখী সরকারের এ সক্রিয়তা তৈরি হয়েছে প্রথমত, এ দেশের বিভিন্ন সময়ের শাসকগোষ্ঠীর লুটেরা ভূমিকা এবং দ্বিতীয়ত, তার ওপর ভর করে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রথমে কাঠামোগত সমন্বয় কর্মসূচি ও পরে পাট শিল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের নির্দিষ্ট ধ্বংসাত্মক ‘উন্নয়ন’ কর্মসূচি থেকে। উন্নয়নের নামে বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় কীভাবে সর্বনাশা জাল বিস্তার করে এবং বৃহৎ রাজনৈতিক দল, কনসালট্যান্ট, আমলা, বৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী সহযোগে তার নকশা বাস্তবায়ন করে, তার নির্মম দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের পাট শিল্প। এর শিকার শুধু পাট শ্রমিকরা নন, শিকার পুরো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর পরিত্যক্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয়, পাটকলগুলোর সামগ্রিক তত্ত্বাবধানের জন্য গঠন করা হয় বাংলাদেশ পাটকল সংস্থা (বিজেএমসি)। পাটকলসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রীয়করণ খুব সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিত ছিল না। ব্যবস্থাপনা ছিল দুর্বল। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমে নতুন ধনিক শ্রেণী গড়ে ওঠার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহূত হতে থাকে। স্বাধীনতার পর থেকে পাটকলে যে লোকসান বাড়তেই থাকে, তার পেছনে কয়েকটি কারণ উল্লেখযোগ্য: (১) পাকিস্তান আমলে পাট শিল্পের জন্য যেসব সুবিধা ও ভর্তুকি ছিল সেগুলো অব্যাহত না রাখা। (২) যথাসময়ে পাট ক্রয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ না দেয়ায় বিলম্বে দুই বা তিন গুণ বেশি দামে পাট ক্রয়। (৩) মেশিনপত্র নবায়ন না করা, উৎপাদিত পণ্যে বৈচিত্র্য না আনা। (৪) বিদ্যুতের সংকট সমাধানে এমনকি বিকল্প জেনারেটর ব্যবহারেও উদ্যোগ না নেয়া। (৫) দেশের মধ্যে পাটজাত পণ্য ব্যবহার বাড়ার কোনো উদ্যোগ না নেয়া। (৬) আন্তর্জাতিকভাবে পাটজাত পণ্যের নতুন চাহিদা তৈরি না করা। বিদ্যমান চাহিদার বাজার ধরার উদ্যোগ না নেয়া। (৭) ব্যাংকঋণ ও চক্রবৃদ্ধি সুদের চাপ বৃদ্ধি। (৮) সরকারি দলের কাজে শ্রমিকদের কর্মসময় ব্যবহার করা। (৯) সরকারি দলের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য শ্রমিক নেতার নামে সন্ত্রাসীদের লালন-পালন। (১০) মন্ত্রণালয় থেকে বিজেএমসি ও মিল ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত দুর্নীতিবাজদের আধিপত্য।

নব্বইয়ে দশকের শুরুতে যখন দুর্নীতি, লুণ্ঠন আর সরকারের বৈরী নীতির কারণে পাট শিল্পের জীর্ণদশা তখন বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে প্রবেশ করে। পাট খাতে সংস্কার কর্মসূচির কথা বলে প্রথমে দুটি সমীক্ষা চালানো হয়। এ সমীক্ষা দুটির একটি হলো ইইসির অর্থসংস্থানে ‘দ্য জুট ম্যানুফ্যাকচারিং স্টাডি’ এবং আরেকটি হলো বিশ্বব্যাংকের আইডিএর অর্থ সংস্থানে সমীক্ষা ‘বাংলাদেশ-রিস্ট্রাকচারিং অপশনস ফর দ্য জুট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি’। এসব সমীক্ষার ধারাবাহিকতাতেই ১৯৯৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘জুট সেক্টর অ্যাডজাস্টমেন্ট ক্রেডিট’-এর আওতায় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়। এতে ঋণ প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় ২৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঋণ করে যেসব কাজ করার চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকার আবদ্ধ হয়, সেগুলোর মধ্যে পাট শিল্প নবায়ন, বৈচিত্র্যকরণ বা সম্প্রসারণের কোনো কর্মসূচিই ছিল না। যা ছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাষ্ট্রায়ত্ত মিল বন্ধ ও সংকোচন, শ্রমিক ছাঁটাই, বেসরকারীকরণ এবং মজুরি বাড়ানো বন্ধ রাখা ও মজুরির অনুপাত কমানো।

বিশ্বব্যাংকের সেই সংস্কার কর্মসূচিতে আশাবাদ প্রচার করা হয়েছিল যে, সংস্কার শেষ হতে হতেই পুরো খাত ব্যক্তিমালিকানাধীনে চলে যাবে। বলা হয়েছিল, এসবের মধ্য দিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং এ খাতের উন্নয়ন ঘটবে। পরিষ্কার দেখা গেল, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, উৎপাদনশীলতা কমেছে, কর্মসংস্থান শতকরা ৮০ ভাগ কমে গেছে আর সব মিলিয়ে শিল্প প্রসারের বদলে গুরুতর সংকোচন ঘটেছে।

তাই পাটকল ও তার শ্রমিকদের আজকের অবস্থা হঠাৎ করে আসেনি, ২৫ বছর ধরে উন্নয়ন নামের পরিকল্পিত নীতিমালার কারণে পাটকলে লোকসান বেড়েছে, যন্ত্রপাতি নবায়ন হয়নি, উৎপাদন বৈচিত্র্য আসেনি, পরিবেশবান্ধব এ শিল্প বিকাশের জন্য কোনো পরিকল্পনাও হয়নি। আর এরই পরিণতি শিল্প ও শ্রমিকের বিপর্যয়। বিভিন্ন সময়ে নীতিনির্ধারকদের ভূমিকা থেকে বোঝাই যায়, এমন একটি পরিস্থিতি তৈরিই তাদের লক্ষ্য থাকে, যাতে শ্রমিক কর্মচারীরা মজুরি না পেয়ে কাজের নিরাপত্তা হারিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন। তারপর একটা সুবিধাজনক সময়ে চিরতরে বন্ধ ঘোষণা করা হয় এগুলো। অনেক কারখানাই বন্ধ হয়েছে, বাকিগুলোও সেই পথে। এসব কারখানার জমির দিকে এখন ভিআইপি দুর্বৃত্তদের নজর। একই নীতিকাঠামোর শিকার চিনিকলগুলোও। এসব প্রতিষ্ঠানের জমি দখলকে বৈধতা দেয়ার জন্য নীতিমালা তৈরি, তা বাস্তবায়নের কমিটিও গঠিত হয়েছে কয়েক বছর আগে।

স্বাধীনতার আগে ষাটের দশকে বাংলাদেশের পাট ছিল বৈষম্য ও নিপীড়নবিরোধী রাজনীতির কেন্দ্রীয় বিষয়। পুরো পাকিস্তানের রফতানি আয়ের প্রধান উৎস ছিল পাট, কিন্তু এ বৈদেশিক মুদ্রার অধিকাংশ ব্যয় হতো তত্কালীন পশ্চিম পাকিস্তানে। স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম স্বপ্ন ছিল এ পাটকে ঘিরেই। ভাবনা ছিল এ পাট বাংলাদেশের মানুষেরই কাজে লাগবে এবং তা বাংলাদেশকে যথাযথ উন্নতির পথে নিয়ে যাবে। কিন্তু এটা যে হয়নি তা আজকের কোথাও নিশ্চিহ্ন, কোথাও বিধ্বস্ত পাটকলগুলোর এলাকা আর ততোধিক বিধ্বস্ত শ্রমিক মানুষদের দেখলে বুঝতে কারো সময় লাগার কথা নয়।

আনু মুহাম্মদ: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন