রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনা

দুশ্চিন্তা-বাড়াচ্ছে-করোনা

দেশে তখন করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ মাসের মধ্যে এই প্রথম ২ দিন ধরে শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। গত শনিবার করোনায় অন্তত ৩ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার ২৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সাপ্তাহিক হিসাব বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষণ হলো- বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫০ শতাংশ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু করোনাভাইরাস ক্রমাগত রূপ পরিবর্তন করছে, তাই কোনো ভ্যাকসিনই এর বিরুদ্ধে আজীবন সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। দুটি ওমিক্রন সাবভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশকে বিপর্যস্ত করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক এ সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে এই সাবভ্যারিয়েন্ট দায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল সোমবার আদালতের কার্যক্রম চলাকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ তথ্য জানিয়েছেন। আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সুপ্রিম কোর্টের ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত। দ্বৈত বেঞ্চের একজন করোনায় আক্রান্ত হলে ওই বেঞ্চের বিচার কাজ বন্ধ থাকে। করোনার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বেঞ্চে বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে।

করোনা শনাক্তের ঊর্ধ্বগতির এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত না হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ চিন্তিত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী বলেন, এখন থেকেই আমাদের বিভিন্ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে, আমরা সেটা ইতোমধ্যে নিয়েছি। করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো ব্যবস্থা নিয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় প্রথম স্থানে আছি। কিন্তু আবারও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত।

আরও পড়ুনঃ  কর্মসংস্থানের অর্ধেকই ঢাকায়

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রথমে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রার কথা জানালেও পরে তা কমিয়ে ৭০ শতাংশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২৬ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির ১৬ মাসে প্রথম ডোজ গ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৮৯ লাখ ৯৫ হাজার ৮০৯ জন; যা জনসংখ্যার ৭৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১১ কোটি ৯১ লাখ ৯৯ হাজার ২৪৫ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৭০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। সেই হিসাবে দেখা যায়, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ১ কোটি বেশি মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে দ্বিতীয় ডোজেও।

টিকার আওতায় অধিকাংশ জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আসার কারণে করোনায় মৃত্যু কম বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, যারা টিকা এখনও নেয়নি, তাদের অবশ্যই টিকা নিতে হবে। আমাদের ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় চলে এসেছে। এটা আমাদের জন্য আরেকটি মাইলফলক।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন