দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অর্থ প্রয়োজন। আর সেই অর্থ আয় করতে হলে কর কাঠামো সহজ থেকে সহজতর করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় কর সংগ্রহ করা সম্ভব। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে এনবিআর ও ব্যাংকগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে এটি সহজেই করা যায় বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
তিনি বলেন, আমাদের কর আদায় বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে মোবাইলে খুব সহজেই প্রতি মাসে যাতে কর দেয়া যায় সেই পদ্ধতি নেয়া যেতে পারে। বেতন থেকে একটি অংশও কেটে রাখার ব্যবস্থা নেয়া যায়। কেননা কানাডাসহ অনেক দেশেই এটি চালু আছে।
শনিবার মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস ও দৈনিক আনন্দবাজার আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩: পর্যালোচনা’ শীর্ষক ওয়েনিবারে এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ত্রিশাল-ময়মনসিংহের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান, ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শারমীন রিনভী ও প্যানেল আলোচক ঢাকা পোস্টের জেষ্ঠ প্রতিবেদক আবদুর রহমান মাসুম। সংগঠনটির আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এনায়েতুল্লাহ কৌশিক, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জীম মণ্ডল।
ড. আতিউর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু শুধু আবেগের জায়গা নয় বরং এটি ভুটান, নেপাল, পশ্চিমবঙ্গ, আসামের সাথে উপ-আঞ্চলিক ব্যবসায়িক জোনে পরিণত হবে। ট্রান্স এশিয়া হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবো। সুতরাং আমাদের ব্যাংক, আইসিটি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রকল্পে স্টার্টআপের জন্য যে বাজেট আছে তার বিশাল একটি অংশ এখানকার মানুষের জন্য বিনিয়োগ করা দরকার। পাকিস্তানের ভারতের সঙ্গে ৭০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা ছিল সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা দূর থেকে পণ্য আনার চেয়ে কাছের দেশগুলো হতে পণ্য আনলে পারলে খরচ অনেক কমে যাবে।
আর পদ্মা সেতুর কারণে বছরে ১.২৬ শতাংশ জিডিপিতে যুক্ত হবে, রেলে ১ শতাংশ, ২১ জেলায় ৩.৫ শতাংশ জিডিপি বাড়বে, ১.২ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বছরে ২ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এর প্রভাব পুরো অর্থনীতিতে পড়বে।
আবদুর রহমান মাসুম বলেন, বর্তমান প্রায় ৮০ লাখ ব্যক্তির ইটিআইএন রয়েছে। যেহেতু প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন রিটার্ন জমার বড় চাপ আসবে। ২৫ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর। অফিস স্পেসের অভাব ও লোকবল সংকটের কারণে এমন অবস্থা। উপজেলায় পর্যায় যত দিন না নিজস্ব কর অফিস স্থাপন করা না যায় ততদিন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অর্থাৎ অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত করে আপাতত সংকট সমাধানে কর কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে আপাতত একসাথে কাজ করতে পারে। কারণ দুটি প্রতিষ্ঠানই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ।
আনন্দবাজার/টি এস পি