শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে দুর্যোগের ক্ষতি ৭৬ শতাংশ কমানো সম্ভব’

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ধারণা, পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও ৭৬ শতাংশ ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি থাকলে এবং আয়ের উৎস বন্ধ না হলে প্রতিটি পরিবার এ পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। পাশাপাশি প্রস্তুতি থাকলে এবং বেতন-ভাতায় সমস্যা না হলে চাকরিজীবী পরিবারের বার্ষিক আয়ের ৮১ শতাংশ ক্ষতি কমবে বলে জানায় বিআইডিএস।

গত বুধবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বিআইডিএসের কার্যালয়ে ‘দ্য নিউ ডিটারমিনেশন অব হাউসহোল্ড ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস বিহেভিয়ার অ্যান্ড পলিসি ইফিসিয়েন্সি অন বাংলাদেশী হাউসহোল্ডস’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিআইডিএস’র গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেছেন সংস্থাটির রিসার্চ ফেলো আজরিন করিম।

বিআইডিএস সূত্রে জানা যায়, দেশের ৬৪ জেলার প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮০টি পরিবারের তথ্যের ভিত্তিতে এ গবেষণা করা হয়েছে। সরকারের তিনটি নীতির ওপর গবেষণা চালিয়েছে তারা। এগুলো হলো, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিদ্যমান আগের সতর্কতা ব্যবস্থা, প্রস্তুতির জন্য জনসচেতনতা, দুর্যোগ পরবর্তী সরকারের আর্থিক সহায়তা।

গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় পরবর্তী বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার চেয়ে পূর্ববর্তী প্রস্তুতির ওপর জোর দিতে হবে। এতে ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। এক্ষেত্রে সচেতনতার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষকে পর্যাপ্ত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

গবেষণায় দেশে শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে সচেতনতার সুযোগ কম বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে তুলনা করে বলা হয়, বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ ধারণা দেয়। থাইল্যান্ডে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ১১ শতাংশের বেশি ধারণা দেয়া হয়। কিন্তু দেশের এই আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে অনানুষ্ঠানিক খাতের পরিবারের নারীরা যুক্ত হলে সেই পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

আরও পড়ুনঃ  টাঙ্গাইলে কাফনের কাপড় পরে জেলা প্রশাসন কর্মচারীদের আন্দোলন

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষাকে আরও গুরুত্ব দেয়ার ওপর জোর দেয়ার পাশাপাশি নারীদের দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত জ্ঞান দেয়া খুবই জরুরি বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধ নির্মাণে সরকারের নীতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে মৃত্যুহার ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর ক্ষেত্রে। তবে দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ ঝুঁকি কমানো ওপর খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। এ জন্য এসডিজি ১৩ বা জলবায়ু কর্মপরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ত্রুটিগুলো খতিয়ে দেখা দরকার।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন