রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানিবন্দী পোস্ট অফিস

পানিবন্দী পোস্ট অফিস

এক বিল্ডিংয়ে ডাক বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি অফিস। বৈদেশিক ডাক, রেলওয়ে মেইল সর্টিং (আর.এম.এস) ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সাব অফিস। সিটি করপোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় কায়েস্তরাইল সড়কের মুখেই এক বিল্ডিংয়ে এই ৩টি অফিসের অবস্থান। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই গুরুত্বপূর্ণ এই ৩টি অফিস হয়ে পড়ে পানিবন্দী। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় এই অসিফগুলোতে কর্মরতরা।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ার ফলে বৈদেশিক ডাক, আর.এম.এস ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সাব অফিসের বিলিংয়ের চারপাশে হাটুপানি জমে রয়েছে। বিল্ডিংয়ের ভেতরে সিঁড়ির নিচেও থৈ থৈ করছে পানি। এ পানিতে ময়লা-আবর্জনা ও পোকামাকড় ভাসছে। সকালে এসে এই ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি মাড়িয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসের ভেতরে ঢুকেছেন। অফিসের কাজে বার বার এই পানি মাড়িয়েই বের হতে হচ্ছে তাদের। অফিস শেষে বাসায় ফিরতে হবে সেই পানি মাড়িয়েই।

এই ৩ অফিসে কর্মকর্তরতরা জানান, বঙ্গবীর রোডের সঙ্গে সংযুক্ত কায়েস্তরাইল সড়কে সম্প্রতি সংস্কার কাজ করানো হয়েছে। এর ফলে ডাক বিভাগের এই বিল্ডিংটি রাস্তার সঙ্গে সমতল নয়, বিল্ডিংয়ের ভিটে একটু নিচে পড়ে গেছে। তাই অল্প বৃষ্টিতেই ডাক বিভাগের বিল্ডিংটি পানিবন্দী হয়ে যায়। আর সেই পানি বিল্ডিংয়ের সামনের ছোট ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। তার কারণ হচ্ছে- বঙ্গবীর রোডের ড্রেনে ছোট ড্রেনের সংযোগ নেই। বৈদেশিক ডাক অফিসের পাশের কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের ব্যক্তিগত জায়গায় ড্রেন করতে দিচ্ছেন না। সিসিকও বিষয়টি সমাধান করতে পারছে না। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই বৈদেশিক ডাক কার্যালয়ের চারপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মৌসুম পুরোটাই এই ভোগান্তি পোহাতে হয় ওই অফিসগুলোতে কর্মরতদের। এ বিষয়ে বার বার স্থানীয় কাউন্সিলর, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবরে লিখিতভাবে জানিয়েও সমাধান পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা

এ বিষয়ে সিলেট বৈদেশিক ডাক অফিসের সুপারভাইজার আবু জাহিদ খান দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেই আমাদের অফিসের চারপাশে হাটুপানি জমা হয়ে পড়ে। ময়লা পানি পেরিয়ে আমাদের অফিসে ঢুকতে হয় আবার বের হতে হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে এমন হতো না। সিটি করপোরেশন মূল রাস্তায় ড্রেনের কাজ করাচ্ছে, সেই ড্রেনে আমাদের অফিসের সামনের ছোট ড্রেনটির সংযোগ স্থাপন করিয়ে দিলে আর এমন ঘটতো না। কিন্তু সিসিক সেটি করতে পারছে না। সে কাজে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। যার ফলে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হয় না। এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে বার বার অবগত করা হয়েছে। সিসিকও বিষয়টি জানে। কিন্তু ডাক বিভাগের এত গুরুত্বপূর্ণ ৩টি অফিস বার বার পানিবন্দী হয়, অথচ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। বিষয়টি খুবই আক্ষেপের।

এ বিষয়ে সিসিকের ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাকবির ইসলাম পিন্টু দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ডাক বিভাগের ওই অফিসের সামনে ছোট একটি ড্রেন আছে, কিন্তু বঙ্গবীর রোডের মূল ড্রেনের সঙ্গে সেটির সংযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে না। কারণ- ওই অফিসের বাম পাশে বঙ্গবীর সড়কের সঙ্গে যে ব্যবসায়ীদের দোকান, তারা তাদের জায়গা ছাড়তে রাজি নন। আমি কয়েকবার এই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু তারা আমার কথা রাখেননি। তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে- ডাক বিভাগের ওই বিল্ডিংয়ের ভিটে উঁচু করা।

এ বিষয়ে সিসিকের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, এখানে কী সমস্যা হচ্ছে সেটি জেনে আমরা দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন