শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রমিক সংকটে দিশেহারা চাষি

শ্রমিক সংকটে দিশেহারা চাষি

নওগাঁর রাণীনগরে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই ৫০ শতাংশ

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াইয়ের শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা সময় মত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে রাণীনগর উপজেলা জুড়ে ১৮ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সকল জাতের ধান পেকে গেছে। এরই মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কৃষকদের জমির ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, ধান পাকার পর থেকে শুরু করে এপর্যন্ত প্রতি বছর কৃষকদের ৮০ ভাগেও বেশি ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়ে থাকে। তবে এ বছর এখন পর্যন্ত মাঠের ৫০ ভাগের বেশি ধান কাটা মাড়াই হয়নি। কৃষকরা বলছেন, প্রতিবছর নীলফামারী, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, নাটোরসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে রাণীনগর উপজেলায় ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক আসতো। তবে  চলতি বছর চাষিদের চাহিদার তুলনায় মাত্র কয়েকটি জেলার থেকে অনেক কম শ্রমিক এসেছে। তাই ধান কাটার শুরু থেকেই শ্রমিক সংকট দেখা যায়। এদিকে শ্রমিক সংকটের কারণে উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠে ফসল পড়ে থাকায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কাসহ লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সদরের খট্টেশ^র গ্রামের কৃষক শামসুর রহমান জানান, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে আমি প্রায় ১৬ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করেছি। গত ৮ থেকে ১০ দিন আগে আমার জমির প্রায় সব ধান পেকে গেছে। এখন পর্যন্ত ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে পারিনি।

আরও পড়ুনঃ  ৭২ হাজার টন সার আত্মসাতের ঘনায় জামিন পেলেন সাবেক এমপি পোটনসহ ৫ জন

কালীগ্রাম ইউনিয়নের সিঙ্গারপাড়া গ্রামের কৃষক মোস্তাক আহমেদ জানান, আমি এবার ৩০ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। সব ধান পেকে মাঠে পড়ে আছে। দুঃখের বিষয় ধানগুলো কাটা-মাড়াইয়ের জন্য এখনো পর্যন্ত শ্রমিক পাইনি। তিনি আরও জানান, ঝড়ো হাওয়া ও দফায় দফায় বৃষ্টির কারণে আমার বেশকিছু ধান জমিতে নুয়ে পড়েছে। এছাড়া কারেন্ট প্রকার আক্রমণের আশঙ্কায় রয়েছি। ফলে কৃষকরা সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তুলতে না পারলে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আরও কয়েকজন কৃষক জানান, এ মৌসুমে চরম শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় চড়া মূল্যে স্থানীয় শ্রমিকদের কাছ থেকে ধান-মাড়াই করে নিতে বাধ্য হচ্ছি। তারপরেও স্থানীয় শ্রমিকরা সময় মতো কৃষকদের ধান কেটে দিতে পারছেন না। ফলে সঠিক সময়ে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে না পাড়লে ফলন বিপর্যয়সহ লোকসানের আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম দাবি করে বলেন, উপজেলায় শ্রমিক সংকট নেই। বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের উপজেলায় ধান কাটতে শ্রমিক আসছে। ৭০ ভাগেরও বেশি ধান কাটা-মাড়াই হয়ে গেছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ধান কাটা শেষ হবে। কৃষকদের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলেও জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

সংবাদটি শেয়ার করুন