ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেচের আধুনিকায়নে বাড়ছে সুবিধা

সেচের আধুনিকায়নে বাড়ছে সুবিধা

উত্তরাঞ্চলের কৃষিপ্রধান এবং কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। আশেপাশের জেলার তুলনায় এখানকার ফসলের গুণগত মান আর উৎপাদনের হার অনেক বেশি। কৃষিতে সেচ কাজে প্রাকৃতিক পানির উৎস বৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল।

সেচ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য জেলার টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়িবাঁধ ও ভুল্লির বাঁধ সেচ প্রকল্পগুলোর পুনর্বাসন, নদীতীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এতে বিদ্যমান সেচ প্রকল্পগুলো পুনর্বাসনের মাধ্যমে ৭ হাজার হেক্টর কৃষিজমি ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ২ হাজার হেক্টর জমিসহ প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে।

ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রমতে, ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার ব্যাপী নদী খনন কাজ। এরই মধ্যে মাটি কাটার কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন গ্রাউন্ড ওয়াটারের ওপর চাপ কমবে। অন্যদিকে সেচের জন্য অতিরিক্ত জ্বালানি সাশ্রয় হবে। সেচ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার ফসলের নিবিড়তা ২৪৫ শতাংশ উন্নীতকরণের মাধ্যমে বাৎসরিক প্রায় ১৫ হাজার ৮শ টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫৫ কোটি টাকা।

মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র রক্ষাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ৪৫ কিলোমিটার নদ পুনর্খননের মাধ্যমে নাব্যতাবৃদ্ধি এবং ৩ দশমিক ৩০ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজের মাধ্যমে বিভিন্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করবে। তীরে বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে বিরূপ প্রভাব থেকে প্রকল্প এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।

সদর উপজেলার ভুল্লি বাঁধ এলাকার বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, শুকনো মৌসুমে এ এলাকার জমিগুলো পানিশূন্যতার কবলে পড়ে। নদী খননের ফলে শুকনো মৌসুমে পানি জমা থাকবে। এতে বিভিন্ন খাদ্যশস্য ফলানোর ক্ষেত্রে সেচ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও নদীতে মৎস্য আহরণ করে জনগণের চাহিদা পূরণ হবে।

পাউবো ঠাকুরগাঁও বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, প্রকল্প শেষ হলে দুই হাজার ৭০০ হেক্টর জমির প্রভাবে জমি সেচের আওতায় আসবে আরো ২ হাজার হক্টর জমি। শুকনো মৌসুমে এ জমিগুলো সেচ সমস্যায় পড়বে না। নদী তীরে একটু পাড় রেখে বাকি মাটি সরিয়ে নেওয়া হবে। সে পাড়ে গাছ লাগানো হবে। এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার বালু বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। এ প্রকল্পে ৩ জন ঠিকাদার ১৫ কিলোমিটার করে মোট ৪৫ কিলোমিটার নদী খননের কাজ করছেন। প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।

সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন গ্রাউন্ড ওয়াটারের ওপর চাপ কমবে, ঠিক তেমনি সেচের জন্য যে অতিরিক্ত জ্বালানি প্রয়োজন হতো তা সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, সদর উপজেলার ভুল্লি বাঁধে ৪৫ কিলোমিটার নদী খনন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন