শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্যায্য দামে শাস্তির খড়গ

অন্যায্য দামে শাস্তির খড়গ
  • সিলেটে ঈদ উপলক্ষে ভোক্তা অধিকারের তদারকি
  • কাপড়-জুতা-প্রসাধনীর দোকানে অভিযান-জরিমানা

দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আর ১২-১৩ দিন পর মুসলিম উম্মাহের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এ  উৎসব। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সিলেটে জমে উঠতে শুরু করেছে কাপড়-জুতার বাজার। ইতোমধ্যে মার্কেট ও শপিং মলগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে নারী-পুরুষের ভিড়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কাপড়-জুতার দাম হাঁকছেন কেনা দামের চাইতে দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি। কোম্পানির দেওয়া দামের উপর টেম্পারিং করে কয়েকগুণ বাড়িয়ে নিজেদের করে বসিয়ে আরেকটি ম্যূলট্যাগ। বিষয়টি নজরে এসেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের। তাই এবার সরকারি এ সংস্থা এসব অতিরিক্ত মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে। এমন অপরাধে গত কয়েকদিন ধরে মহানগরীসহ সিলেট জেলাজুড়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সিলেট নগরীতে অভিযান চালিয়ে বাটা জুতার শো-রুমকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

নগরীর জিন্দাবাজারস্থ লন্ডন ম্যানশনের নিচতলার ‘বাটা’ জুতার শো-রুমে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে অভিযান চালান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় দেখা যায়, বেশিরভাগ জুতার মধ্যে কোম্পানি নির্ধারিত দাম উল্লেখ নেই। এছাড়াও অনেক জুতায় দোকানের পক্ষ থেকে টেম্পারিং করে নিজেদের মতো করে দামের স্টিকার বসিয়ে দুই-দিন গুণ অতিরিক্ত মূল্যে কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। বিষয়টি হাতে-নাতে ধরে ওই দোকানের মালিককে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  অকারণেই বাড়ছে চালের দাম

এছাড়াও সিলেট জেলা ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারের বিভিন্ন শাড়ি-কাপড়-জুতা এবং কসমেটিকসের দোকানেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানচলাকালে কাপড়ের গাঁয়ে মূল্য না লিখে গোপন কোড লেখার অপরাধে রহমানীয়া শাড়িঘরকে ১ হাজার টাকা এবং ১ হাজার টাকায় কেনা শাড়িতে ২ হাজার ৯শত টাকা লিখে রাখার অপরাধে সিটি ফ্যাশন এন্ড ফেব্রিক্সকে আরো ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

এসব অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, ১ হাজার টাকায় কেনা কাপড়ের দাম চাওয়া হয় ৫ হাজার টাকা। ভোক্তাদের সাথে দাম কষাকষি করে তা বিক্রি হয় কখনও ৪ হাজার টাকায় আবার কখনও ১৫ শ টাকায়। ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেটের বিভিন্ন কাপড়ের বাজারে এভাবেই চলছে বেচাঁকেনা। ফলে কাপড় কিনতে গিয়ে ঠক খেতে হয় সাধারণ ভোক্তাদের। দর কাষাকষি না করতে পেরে অনেকেই হয়তো দ্বিগুন অথবা তিনগুন দামে কাপড় কিনে হচ্ছেন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আবার অনেকে একাধিক দোকান যাছাইবাচাইয়ের মাধ্যমে দরকষাকষি করে যথাযথ দামে কাপড় কিনতে পারলেও ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ও শ্রম।

ভোক্তাদের এ ধরনের হয়রানি ও প্রতারণা থেকে মুক্তি দিতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও কাপড়-জুতার দোকানে অভিযান শুরু করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কাপড়ের গায়ে কোনো গোপন কোড নয়, বরং সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য লেখা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান অব্যাহত রাখবে অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়।

আরও পড়ুনঃ  সড়কের পাশে বর্জ্যরে পাহাড় 

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, সিলেটে ঈদের কেনাকাটায় ভোক্তাদের হয়রানি ও প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে শাড়ি-কাপড়-জুতা ও প্রসাধনির দোকানগুলোতে এমন অভিযান অব্যহত থাকবে। তবে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করতে প্রাথমিক অবস্থায় জরিমানার পরিমাণ সীমিত রেখে সচেতনতামূল প্রচারণায় জোর দিচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তর। পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন