দীর্ঘদিন ধরে ভোগ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। কিন্তু এর মধ্যে কিছু মসলা জাতীয় পণ্যে যেমন – পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ও এলাচসহ আরও কিছু পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি ছিল। এদিকে পেঁয়াজের দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী হলেও স্বস্তি এসেছে আদা-রসুনের দামে।
দীর্ঘ কয়েক মাস বাড়তি দাম থাকার পর গত সপ্তাহে পণ্য দুটির দাম কেজিতে ৪০-৬০ টাকা কমেছে। চাহিদার চেয়ে আমদানি বৃদ্ধি ও দেশীয় পণ্যের মৌসুম হওয়ায় সরবরাহ বেড়ে পণ্য দুটির দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়ত ও দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিছুদিন ধরে পাইকারিতে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০-১১০ টাকায়। এর মধ্যে দেশী আদা ৬০-৮০ টাকা, আমদানীকৃত চীনা আদা ১০০-১১০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ৬০-৭০ টাকা এবং কেরালার আদা ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি পর্যায়ে দেশী আদা ১০০-১২০ টাকায়, চীনা আদা ১৫০-১৮০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ১০০-১২০ টাকা এবং কেরালার আদা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি আদার দাম ৪০-৬০ টাকা কমেছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহে পাইকারিতে রসুনের দাম কেজিতে ৪০-৬০ টাকা পর্যন্ত কমে এসেছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আমদানীকৃত চীনা রসুন বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৮০ টাকার মধ্যে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত কমে বর্তমানে প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। বাজারে সরবরাহ বেশি না থাকলেও বর্তমানে প্রতি কেজি দেশী রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়, যা ঊর্ধ্বমুখী বাজারে ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, টানা চার-পাঁচ মাস ধরে আদা ও রসুনের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। সাধারণত প্রতি কেজি আদা-রসুনের দাম থাকে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ টাকা। কিন্তু গত কয়েক মাসে পণ্য দুটির দাম বেড়ে ১৮০-২০০ টাকায় পৌঁছে। তবে এক সপ্তাহ থেকে এগুলোর বাজার নিম্নমুখী হতে শুরু করে। এ সময়ের মধ্যে পণ্য দুটির দাম কেজিতে কমপক্ষে ৫০-৬০ টাকা পযর্ন্ত কমেছে।
কাঁচাপণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন হামিদুল্লাহ মার্কেট কাঁচাপণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিচ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক মাস ধরে আদা ও রসুনের দাম ঊর্ধ্বমুখী। মৌসুম শেষ হওয়ায় এ সময়ে দেশীয় আদা-রসুন কম ছিল। তবে গত দুই সপ্তাহ থেকে নতুন মৌসুমের আদা বাজারে আসছে। এছাড়া আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রসুনের সরবরাহও বেড়েছে। ফলে পণ্য দুটির দাম অনেক কমে আসছে। মূলত আমদানীকৃত পণ্যের ওপর নির্ভরতার কারণে যখন-তখন বাজার অস্থির হওয়ার সুযোগ তৈরি হয় বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী।
আনন্দবাজার/ইউএসএস