শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মার পাড়ে ইটভাটায় বিপর্যস্ত পরিবেশ

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে গড়ে উঠেছে সারি সারি ইটভাটা।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে গড়ে উঠেছে সারি সারি ইটভাটা। অভিযোগ উঠেছে, নদী পাড়ের চর থেকে ইট বানানোর জন্য মাটি কেটে সাবাড় করছে ইটভাটা সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয়, মাটি পরিবহণের জন্য পদ্মার কোলজুড়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে গড়ে তুলেছে একাধিক অবৈধ রাস্তা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটার কারণে এলাকার প্রকৃতি ও পরিবেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তেমনি বিপন্ন হচ্ছে নদীর তীর। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে প্রকৃতি ও পরিবেশের ধ্বংস করা হলেও দেখার কেউ নেই। ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নবীনগর থেকে চর কুরুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাড় দিয়ে পদ্মার তীরের পাশেই কয়েক বছরেই গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক ইটভাটা।

লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া বলেন, ২০১৪ সাল থেকে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ইটভাটা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। চরের মাটি দিয়ে ইট বানানো লাভজনক হওয়ায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই প্রভাবশালী মহল ৫১টি ইটভাটা গড়ে তোলে। এসব ভাটার অধিকাংশেরই নেই বৈধ অনুমোদন ও কাগজপত্র।

তিনি বলেন, ‘কয়েকটি ভাটা বন্ধ হয়ে গেলেও এ বছর ৩৯টি ভাটা চালু আছে। এসব ভাটায় ইট বানানোর জন্য মাটিরযোগান দিতে পদ্মার চর থেকে দিনরাত এক্সেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে চলছে চরের ফসলি জমি নষ্ট করে মাটি কাটার মহোৎসব।

আরও পড়ুনঃ  ত্রাণের স্লিপ বিক্রির ঘটনা ধামাচাপা দিতে দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন

মাটি পরিবহণের জন্য পদ্মারকোলে বিভিন্ন পয়েন্টে মাটির বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে ট্রাক, ট্রাক্টর দিয়ে মাটি পরিবহণ করা হচ্ছে। লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের লক্ষ্মীকুন্ডা, দাদপুর, নবীনগর ও চর কুরুলিয়ায় নদী বন্ধ করে নির্মাণ করা হয়েছে ইটভাটার মাটি পরিবহণের রাস্তা।

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের পাবনা জেলার সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান বলেন, নদীতে বাঁধ দিয়ে ইটভাটার মাটি পরিবহণের জন্য রাস্তা নির্মাণ করে প্রকৃতপক্ষে একটি অপরাধ কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে প্রভাবশালীরা।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রবাহমান নদীতে এভাবে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা যায় না। এতে করে নদীতে বাঁধার সৃষ্টি হয় এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। এতে নদীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ইটভাটা গুলোর বৈধতা যাচাই বাছাইয়ের জন্য কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।

পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই এর যথাযথ অনুমোদন দিয়ে ইটভাটা চালানো হচ্ছে কি না তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া অভিযোগ পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে, কয়েকজনকে সাজাও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন