শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিমলার খামারিদের বাঁচান

ডিমলার খামারিদের বাঁচান

চিলিং সেন্টার নেই তাই দুগ্ধ খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমনই একটি খবর প্রকাশ করেছে দৈনিক আনন্দবাজার। নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ডিমলার চিত্র এটি। যে দেশে দুধের এত সংকট সেখানে ডিমলার খামারিদের উৎপাদিত অতিরিক্ত দুধ তারা বিক্রি করতে পারছে না। দুধের দাম পাচ্ছে না।

উপজেলায় প্রতিদিন ৬০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত দুধ বাজারে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু কম দামে। কারণ ঐ এলাকায় এই পরিমাণ দুধ উৎপাদিত হলেও দুধ শীতলীকরণ ব্যবস্থা না থাকায় খামারিরা দুধের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। প্রান্তিক খামারিরা পথে বসছে। খড়, ভূসি, ওষুধসহ গরু পোষার যাবতীয় খরচাদি বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা পোষাতে পারছে না। লোকসান গুণতে গুণতে অবস্থা খারাপ হচ্ছে।

ডিমলার খামারিদের এ অবস্থা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে যে নেই, তা নয়। উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ এ বিষয়ে সার্বিক অবহিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার যেখানে দুধ উৎপাদনসহ কৃষিখাতে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে, সেখানে ডিমলার খামারিদের এ অবস্থা হবে কেন? বিশেষ করে বর্তমান সরকার এ খাতে যথেষ্ট নজর দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে দেশে শুধু দুধ উৎপাদনই নয়, কৃষিখাতের সকল ক্ষেত্রেই ব্যাপক উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এমনকি নানা ফল চাষেও দেশ অভাবনীয়ভাবে এগিয়ে গেছে। সেখানে চিলার না থাকায় ডিমলায় দুগ্ধ খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ার এই খবর কোনভাবেই শোভনীয় নয়। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, একসময় ব্র্যাক থেকে দুধ শীতলীকরণ করার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সেটি এখন বন্ধ। এই বন্ধের কারণ অবশ্য বলা হয়নি। এ অবস্থায় সরকারিভাবে এই শীতলীকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। অথবা খামারিদের দুধ ন্যায্যমূল্যে বিক্রির বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। দুধ নিয়ে যাতে খামারিদের পথে বসতে না হয়। খামার বন্ধ করতে না হয়।

আরও পড়ুনঃ  বিমা কোম্পানির প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে

হাজার হাজার শ্রমিক যাতে বেকার হয়ে না যায়। বিশেষ করে চরাঞ্চলের প্রান্তিক খামারিদের জীবন জীবিকা যেন বন্ধ হয়ে না যায়। খবর থেকে জানা যায়, ডিমলার ১০টি চরে সহস্রাধিক মানুষ এই দুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। যাদের জীবন জীবিকা এখন এই খামার নির্ভর। ফলে এ অবস্থায় খামারিদের যেন কর্ম অভাবে চোখে সরষে ফুল দেখতে না হয়। সরকারের এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। দুধ উৎপাদন করে শুধুমাত্র খামারিরাই যে উপকৃত হচ্ছে, জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে তা কিন্তু নয়। এই দুধ ঐ এলাকার ও আশপাশের এলাকার মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। দুধের খামার চাইলেও সব এলাকায় গড়ে তোলা সম্ভব হয় না। খামার গড়ে তোলার অনুকূল পরিবেশ ও ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ফলে দেশের সব এলাকায় স্বল্প আকারে পশু পালন সম্ভব হলেও খামার গড়ে তোলা সম্ভব হয় না। যেসব এলাকার মানুষ নিজেরাই এ খামার গড়ে তুলেছে তাদের এই খামার রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারি সহায়তা দিতে হবে। যে কোনোমূল্যে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন