শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণাঞ্চলে হবে আরেকটি শিপইয়ার্ড

বঙ্গবন্ধুর করা আইনে দেশ বিশাল সমুদ্র পেয়েছে

সমুদ্র এবং সমুদ্রসম্পদের ওপর দেশের জনগণের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স এন্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করেন। জাতিসংঘও এটি পাস করেছিল ১৯৮২ সালে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমুদ্রসংক্রান্ত সমস্যাবলী এ আইনেই সমাধান করা হতো।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ সংস্থাটির সদর দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর করা আইনটি অনুযায়ী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেও সরকার সমুদ্রসীমা নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও ’৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল জিয়া, এরশাদ বা খালেদা জিয়া-তারা কেউই এ দেশের সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে বিকশিত করতে দক্ষিণাঞ্চলে আরো একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। ব্লু-ইকোনমি ও গভীর সমুদ্রে নিরাপত্তা প্রদানে কোস্ট গার্ড বাহিনীর রূপকল্প-২০৩০ ও ২০৪১ অনুযায়ী জাহাজ, সরঞ্জামাদি ও জনবল বৃদ্ধি করা হবে। নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম ড্রাইডক নৌবাহিনীর হাতে সমর্পণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরো একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। ইতোমধ্যে জায়গা পছন্দ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পরামর্শে অলাভজনক উল্লেখ করে খুলনা শিপইয়ার্ড বন্ধ করে দেয়ার প্রক্রিয়া হয়েছিল। আমরা সরকারে আসার পর এটি নৌবাহিনীর হাতে অর্পণ করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে, আমরা পরমুখী হয়ে থাকবো কেন? তা ছাড়া ঐতিহাসিক কাল থেকেই বাংলাদেশে জাহাজ শিল্প নির্মাণ এবং রপ্তানি বাণিজ্য ছিল। তাই সেটাকে আবারো কার্যকর করি। যার ফলে শুধু বিদেশ থেকে কিনে না এনে নিজেরাও তৈরি করার সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো।

আরও পড়ুনঃ  ঈদ সামনে রেখে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৩ বছরে কোস্ট গার্ডের জন্য বিভিন্ন আকারের ৭৭টি জাহাজ ও জলযান নির্মাণ ও সংযোজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে কোস্ট গার্ডের জন্য দুটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, একটি ফ্লোটিং ক্রেন, দুটি টাগ বোট এবং ১৬টি বোট তৈরি করা হয়েছে। কোস্ট গার্ডের ভেসেল ও জাহাজসমূহ নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণর জন্য গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ডও নির্মাণ করা হচ্ছে। নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘বে অব বেঙ্গল’। তাই এর নিরাপত্তা বিধান জরুরি এবং তা যথাযথভাবে করা হচ্ছে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদল হিসেবে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ আনীত বিলের কারণেই কোস্ট গার্ড একটি বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল চার কোস্ট গার্ড সদস্যকে সাহসিকতা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য পদক তুলে দেন।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন