ঢাকা | বুধবার
১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলাম গ্রহণের পর আল্লাহ পুরস্কৃত করেছিলেন ইউসুফকে

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রথম জীবনে ছিলেন ইউসুফ ইয়োহানা, দারুণ এক প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান, তবে ধারাবাহিকতায় খানিকটা সমস্যা ছিল তার। পরের অংশে হলেন মোহাম্মদ ইউসুফ। দারুণ প্রতিভার সঙ্গে পারফরম্যান্স হলো ধারাবাহিক। তাতে পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় চলে এসেছিলেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইউসুফ জানালেন, ব্যক্তিজীবন তো বটেই, তার মাঠের ক্যারিয়ারকেও অদ্ভুতভাবে বদলে দিয়েছিল ইসলাম গ্রহণ!

ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে একটা সময় সমর্থকদের কাছ থেকে দারুণ প্রশংসা কুড়োতেন তৎকালীন ‘ইয়োহানা’। তবে ২০০৫ সালে যেন বাড়তি মনোযোগ আকর্ষণ করে বসেন তিনি। হঠাৎই ধর্ম বদলে ফেলেন তিনি, খ্রিস্টান থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি।

তবে শুরুতে অনেক গুঞ্জন ছিল, সতীর্থদের চাপেই হয়তো তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। সেসব উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি পাকিস্তানের স্থানীয় এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাকে কেউ ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেনি। পাকিস্তানের ওপেনার সাঈদ আনোয়ার ছিল আমার ভালো বন্ধু। ছোট থেকেই তার বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল আমার। দেখতাম, তার পরিবারের সবাই কেমন শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন-যাপন করে। ওটাই আমাকে আকর্ষণ করত।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘আনোয়ার আধ্যাত্মিক জগতে ঢুকে পড়ল। মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুই তাকে ধর্মের প্রতি আরো আকৃষ্ট করে তুলেছিল। তবে তার জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত আমি কাছ থেকে দেখেছি। সে অনেকের অনুপ্রেরণা হয়েছিল। হয়তো আমিও তাকে দেখেই ইসলামে প্রভাবিত হয়েছিলাম।’

ইসলাম গ্রহণের পরই যেন বদলে যান ইউসুফ। পরের বছর টেস্টে রীতিমতো অতিমানবীয় পারফরম্যান্স উপহার দিতে থাকেন দলকে। ভেঙে ফেলেন এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ রানের ৩০ বছরের পুরনো রেকর্ডও। সে বছরের পারফরম্যান্সকে ইউসুফ দেখছেন স্রষ্টার পক্ষ থেকে ইসলাম গ্রহণের পুরস্কার হিসেবে।

সাবেক পাকিস্তান ব্যাটসম্যানের কথা, ‘২০০৫ সালে ইসলাম গ্রহণ করি। ২০০৬ সালে ১১ টেস্টে ১৭৮৮ রান করেছিলাম। ৩০ বছর ধরে টিকে থাকা ভিভ রিচার্ডসের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলাম আমি। এক ক্যালেন্ডার বর্ষে সর্বাধিক রান করি সেবার। তবে আমি কিন্তু ওই বছর আলাদা করে কোনো ট্রেনিং করিনি। আমার মনে হয়, ইসলাম ধর্মকে আপন করার জন্য সর্বশক্তিমান আমাকে পুরস্কার দিয়েছিল। সেই সময় মনে একটা অদ্ভুত শান্তি থাকত। মনে হতো যে কোনো চ্যালেঞ্জ আমি সামলে দিতে পারি। আমার মানসিক অবস্থাটাই আমূল বদলে গিয়েছিল।’

মোহাম্মদ ইউসুফ পাকিস্তানের হয়ে তিনটি টি-টোয়েন্টি, ৯০ টি টেস্ট ও ২৮৮ টি ওয়ানডে খেলেছেন। যেখানে তিনি যথাক্রমে ৫০, ৭৫৩০ ও ৯৭২০ রান করেছিলেন। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলে শেষ বারের মতো পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন