ঢাকা | মঙ্গলবার
৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাশরাফি বা সাকিব এখনই কি বিসিবি সভাপতি হচ্ছেন?

মাশরাফি বা সাকিব এখনই কি বিসিবি সভাপতি হচ্ছেন

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন এমন খবরের পর ক্রিকেট পাড়ায় নতুন গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

মন্ত্রী হওয়ার খবর প্রকাশের পর থেকে বুধবার (১০ জানুয়ারি) ক্রিকেট পাড়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড়, নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিলে বোর্ড সভাপতি পদ ছাড়তে হবে নাজমুল হাসান পাপনকে এবং তিনি পদ ছাড়লে তবে কি মাশরাফি হবেন পরবর্তী বোর্ড প্রেসিডেন্ট।

দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক এবং দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। । সুতরাং, অনেকে ধরেই নিয়েছেন পাপনের জায়গায় বোর্ড সভাপতি হতে যাচ্ছেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দারুণভাবে সাড়া পড়েছে। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার অনেক বর্ণাঢ্য, সফল ও স্বার্থক। মুক্ত ও উদার মনের, হাসি-খুশি এবং প্রাণখোলা স্বভাবের মাশরাফি মানুষ হিসেবেই সবার পছন্দের ও প্রিয়। মাঠ ও মাঠের বাইরে তার নেতৃত্ব ক্ষমতাও বরাবরই প্রশংসিত। সমাদৃত। নেতা হওয়ার সব রকম যোগ্যতা তার আছে। বিশ্বজোড়া পরিচিতিও আছে তার। একটানা প্রায় পাঁচ বছর জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল দেশে ও বিদেশে সব ফরম্যাটে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স করেছে। ফলও হয়েছে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। এছাড়া গত পাঁচ বছর নিজের নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্য হিসেবেও প্রচুর কাজকর্ম করেছেন মাশরাফি। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সফলভাবে পরিচালনার জন্য তাকে নিয়ে অনেকেই নতুন স্বপ্ন দেখছেন।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের এ তারকাকে প্রায় ৯৫-৯৮ শতাংশই বোর্ড সভাপতি হিসেবে পেতে চাচ্ছেন। বিশেষ করে ফেসবুকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে মাশরাফি রয়েছেন তালিকার এক নম্বরে। কিন্তু তিনি বা অন্য কোনো ক্রিকেটার বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসলেই বোর্ড সভাপতি হতে পারবেন কি না, বিসিবির সংবিধান ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সেটা সম্ভব কি না- তা খুঁটিয়ে দেখছেন না কেউই।

সংস্থাটির সভাপতি হতে হলে আসলে কেমন দিকগুলো থাকা দরকার তা নিশ্চিত হওয়া গেছে বিসিবির কয়েকজন দায়িত্বশীল শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে। তারা জানিয়েছেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক, এ মুহূর্তে জাতীয় দলে কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ মুহূর্তে নাজমুল হাসান পাপন যদি বিসিবি প্রধানের পদ ছেড়েও দেন, তাহলে সবার আগে বাকি পরিচালকদের মধ্য থেকে কেউ একজন হবেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট।

বোর্ড সভাপতি পাপন ছেড়ে দিলেও মাশরাফি-সাকিব ও জাতীয় তারকাও এখন বোর্ড প্রধান হতে পারবেন না। কারণ তারা কেউই এখন ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর নন। বর্তমান বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্যও নন। আগে কাউন্সিলর হতে হবে। নির্বাচন করে জিতে পরিচালক নির্বাচিত হওয়া হলো দ্বিতীয় ধাপ। এরপর বোর্ড সভাপতি হতে গেলে পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। অর্থাৎ বিসিবি সভাপতি হতে হলে প্রথমে বিসিবির কাউন্সিলর, এরপর নির্বাচন করে পরিচালক নির্বাচিত হওয়া হলো দ্বিতীয় ধাপ। বোর্ড প্রধানের পদ পেতে শেষ ধাপ হলো পরিচালকদের ভোটাভুটিতে নির্বাচিত হওয়া। কারণ বোর্ড সভাপতি ঠিক হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিচালনা পর্ষদের মতামতের ভিত্তিতে। কাজেই সেই জায়গায় পাপন বিসিবি প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালে আপাতত বিসিবির গঠনতন্ত্র ও সংবিধানে পরিচালনা পর্ষদের বাইরে থেকে আরও কারও বোর্ড সভাপতি হওয়ার কোনো বিধান নেই এবং সেটা মাশরাফি কিংবা সাকিবের মতো দেশবরেণ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, জাতীয় দলের অধিনায়ক ও শীর্ষ তারকার পক্ষেও বোর্ড প্রধান হওয়া সম্ভব নয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন