চলতি বিশ্বকাপে প্রথম অঘটন, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে জয় তুলে নিয়েছে মুজিব-নবিরা। আফগানিস্তানের দেয়া ২৮৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২১৫ রানেই গুটিয়ে যায় বাটলারের দল। ৬৯ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানিস্তান।
রোববার (১৫ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯ ওভার ৫ বলে ২৮৪ রান তুলে অলআউট হয় আফগানিস্তান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে যে ঝড় তুললেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ, দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন মার্ক উড-রিস টপলিরা। ১৩ ওভারেই আফগানরা পার করে ফেলে ১০০। ইংল্যান্ডকে ব্রেকথ্রু এনে দেন আদিল রশিদ। অন্য প্রান্তে দেখেশুনে ব্যাট চালানো ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান (২৮) দলীয় ১১৪ রানে ফেরার পর ধস নামে আফগানদের ইনিংসে। তার সঙ্গে ৮ রান যোগ হতেই রহমত শাহকে (৩) ফিরিয়ে আবারও আদিলের উইকেট উদ্যাপন।
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে স্বস্তিটা এলো পরের বলে। আদিলের ওভারেই রানআউট গুরবাজ। সাজঘরে ফেরার আগে কী ঝড়ই না তুলেছিলেন এই ওপেনার। ৮ চার ও ৪টি ছয়ে ৫৭ বলে খেললেন ৮০ রানের ইনিংস। সেখান থেকে ১৯০ রান করতেই নেই ৬ উইকেট। হাতে তখনো প্রায় ১৪ ওভার। শেষ পর্যন্ত প্রথম দুই ম্যাচে হারা আফগানরা যে ৪৯.৫ ওভারে ২৮৪ রানের সংগ্রহ পেল সেটির বড় রূপকার উইকেটরক্ষক ইকরাম আলিখিল (৫৮)। শেষ উইকেট হিসেবে ফেরা মুজিব-উর-রহমানের ২৮ রানের ক্যামিও তো ছিলই, সঙ্গে রশিদ খানের (২৩) ইনিংসটির কথাও বলতে হয়। ইংল্যান্ডের হয়ে সফল বোলার আদিল, ৪২ রানে নেন ৩ উইকেট। পেসার উডের শিকার দুটি।
ইংল্যান্ডের জন্য ২৮৫ রানের লক্ষ্য এমনই বা আর কী! তবে লক্ষ্য তাড়া করে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়তে সময় লাগেনি তাদের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ফজলহক ফারুকির তোপের সামনে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন জনি বেয়ারস্টো (২)। আরেক ওপেনার ডেভিড মালান (৩২) এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করলেও বোল্ড হয়ে ফেরেন জো রুট (১১) ও অধিনায়ক বাটলার (৯)। দেখতে দেখতে ৯১ রানে নেই ইংল্যান্ডের চার টপ অর্ডার। দেয়াল হয়ে ওঠার আগে মালানকে বিদায় করেন আফগানিস্তানের হয়ে প্রথম ১৫০ তম ওয়ানডে খেলতে নামা মোহাম্মদ নবী। তবে একাই লড়ে গেছেন হ্যারি ব্রুক। অথচ ইংল্যান্ডের প্রাথমিক দলে ছিলেন না তিনি। অনেক আলোচনার পরে চূড়ান্ত দলে জায়গা পাওয়া। সেই ব্রুকই আজ হাল ধরেছিলেন ইংল্যান্ডের।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা আফগান স্পিনারদের সামনে তিনিও আত্মসমর্পণ করেন। মুজিবের তৃতীয় শিকার হিসেবে ৬১ বলে ৬৬ রানে ফেরেন ব্রুক। তাতেই সব আশা শেষ হয় যেতে বসেছিল ইংল্যান্ডের। তবে শেষ দিকে আদিলের ২০ ও উডের ১৮ ও টপলির অপরাজিত ১৫ রান শুধু হারের ব্যবধানটুকুই কমাতে পেরেছে। রশিদ তাঁর শেষ ওভারের তৃতীয় বলে উডকে নিজের তৃতীয় শিকার হিসেবে বোল্ড করলে ঐতিহাসিক জয়ের আনন্দে মেতে উঠেন আফগানরা। ১৩ তম ম্যাচে এসে দেখা গেল এ বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন। আফগানরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারাল ৬৯ রানে। ইংল্যান্ড ৪০.৩ ওভারে থামে ২১৫ রানে। বিশ্বকাপে ১৫ ম্যাচ পর জয় পেল আফগানিস্তান, এটি তাদের দ্বিতীয় জয়ও। যেকোনো ফরম্যাটে এটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয়ও আফগানদের।
বিশ্বকাপে এর আগে ওয়ানডেতে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল দুইবার, ম্যাচ দুটিই জিতেছিল ইংল্যান্ড।