সিলেটে আলুও কিনতে হয়ে ২৫ টাকায়
চলছে সবজির মৌসুম। তবে দাম কম নয়। এ অবস্থায় সিলেটে নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ^াস ওঠছে সবজি ও নিত্যপণ্য ক্রয়ে। ভোক্তাদের অভিযোগ, মুখে বললেও বাজার মনিটরিং হচ্ছে না ঠিকমতো। যার ফলে কোনো কারণ ছাড়াই পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বাজার যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে তাদের নজরধারী রয়েছে সবসময়। নিয়মিত অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে।
সিলেটে বিভিন্ন সবজি বাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সব প্রকারের সবজি, ভোজ্যতেল, গরুর মাংস, ডিম, মুরগিসহ প্রায় সকল নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এমনকি সবজির মৌসুম চলাকালীন সহজলভ্য আলুটিও কিনতে হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে।
নগরীর বন্দরবাজার, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা ও সুবিদবাজার বাজারের সবজি বিক্রেতা এবং নিত্যপণ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির প্রতিকেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এসব বাজারে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৪০-৬০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাঁজর ৪০ টাকা, কুমড়া আকারভেদে প্রতিটি ৩০-৬০ টাকা, লাউ আকারভেদে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৫০-৭০ টাকা, মুলার কেজি ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ৮০ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি এবং লেবুর হালি ৩০ টাকা।
জানা যায়, এসব বাজারে পুরান ও নতুন আলুর দাম কমেছে। নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। দাম কমেছে পেঁয়াজেরও। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
বাজারে চায়না রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। দেশি আদার কেজি ৬০ টাকা। চায়না আদার দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। ইন্ডিয়ান ডালের কেজি ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ইন্ডিয়ান ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। দেশি ডালের কেজি ১২০ টাকা। বাজারে ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭০ টাকা। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি ৮৫ টাকায় ও আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়।
অপরদিকে, বাজারে বেড়েছে ডিমের দাম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা। সোনালী (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৩০ টাকা কেজি।
সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারের সবজি ব্যবসায়ী শাহীন আহমদ বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে সব রকমের সবজির দাম ঊর্ধ্বগতি। এখন পর্যন্ত দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং প্রতিদিন কেজিতে ১/২ টাকা করে বাড়ছে।
তবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে বলে দৈনিক আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর সিলেট জেলার সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম মাসুদ। তিনি বলেন, বাজার যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে। নিয়মিত অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অভিযানকালে বিভিন্ন বাজারে ও দোকানে পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের তালিকা আছে কি না সেটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। একই সাথে ওই মূল্য তালিকা অনুযায়ী ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে থাকি আমরা। আমাদের এমন নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।