ইউরিয়া (সাদা) প্রতিবস্তা ৮০০ টাকা বদলে বিক্রি করা হচ্ছে ৮৩০ থেকে ৮৫০ টাকা অথচ রশিদ দিচ্ছে ৮০০ টাকা। এমওপি সার সরকার নির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকা হলেও বিক্রি করা হচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা। সুযোগ বুঝে ১৪০০ টাকাও বিক্রি করা হচ্ছে
হাওর অধ্যুষিত কৃষিনির্ভর এলাকা নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ী। এ উপজেলার একমাত্র ফসল বোরো ধান। বতর্মানে বোরো চাষে রাসায়নিক সারের পরিমান অপ্রতুল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষি। সার সংকট নিয়ে বেশ কয়বার বীজ সার কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে কোন সদুত্তোর মিলছে না অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের।
খালিয়াজুরীর কৃষক কাজল ও মনির হোসেন বলেন, সারের সমস্যায় আমাদের ফসল নষ্টের পথে। সময়মত রাসায়নিক সার জমিতে দিতে না পারলে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হবে এ এলাকার চাষিরা। এদিকে এ সংকটের জন্য বিএডিসি কর্তৃক মনোনীত সার ডিলার মেসার্স হাবিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারি ফুল মিয়াকে দায়ী করছেন কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস।
সরেজমিনে জানা যায়, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের বেশি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে রাসায়নিক সার। ইউরিয়া (সাদা) প্রতিবস্তা ৮০০ টাকা বদলে বিক্রি করা হচ্ছে ৮৩০ থেকে ৮৫০ টাকা অথচ রশিদ দিচ্ছে ৮০০ টাকা। এমওপি সার সরকার নির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকা হলেও বিক্রি করা হচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা। সুযোগ বুঝে ১৪০০ টাকাও বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে এমওপি সারবিক্রি করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজারে এমওপি সারের সংকট থাকায় বেশি মূল্যে ক্রয় করে বেশি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া খালিয়াজুরীতে সার গুদামের (ডিলারের ঘরের) সামনে টানানো নেই সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য তালিকা।
খালিয়াজুরীর কৃষক মো. কাছু মিয়া ও জগদীশ বর্মন বলেন, ডিলারের ব্যবস্থাপক দুলাল সরকার তার ইচ্ছেমত সারবিক্রি করে। যাকে মনে চায় দেয় আর মন না চাইলে দেয় না। ১৫ থেকে ২০ দিন পর কিছু সার আনে এর পর আর নাই। রাতে আধারে ইউরিয়া (চিকন) ৯০০ টাকা করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে মেসার্স হাবীব এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী ফুল মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আজ আসবে কাল আসবে বলে কাল ক্ষেপন করছেন। অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
সার বীজ কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, যদি সঠিক সময়ে সার সরবরাহ করতে না পারে, তাহলে জরুরি সভায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সার সংকট বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধা অমলেন্দু দেবরায় বলেন, সার সংকট মনে হয় আর যাবে না। কারণ সারের ডিলারের মনে হয় আর্থিক সংকট। যা শুনা যায়। শুধু তাই নয় কার্যকারীতায় অনেকটা তাই বুঝা যায়। কারণ ১৫ দিন পর পর এভাবে সার ডেলিভারি দিলে সরকারের উৎপাদনের টার্গেট তো ফেইল করবেই অপরদিকে কৃষকগণের ও চরমভাবে উৎপাদন বিঘ্নিত হবে। খালিয়াজুরী উপজেলা সার বীজ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে বর্তমানে সারের কোনো সংকট নেই। আর যদিও সংকট হয় তাহলেও বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি সার বেশি দামে বিক্রি করে তাহলে লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।