ঢাকা | সোমবার
৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সার মিলছে না ডিমলায়

সার মিলছে না ডিমলায়
  • অতিরিক্ত দামে হতাশ বোরো চাষিরা
  • প্রতিকেজিতে বেশি ৫-১৫ টাকা

নীলফামারীর ডিমলায় ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ করেছে বোরো চাষিরা। এতে বোরো মৌসুমের শুরুতেই আবাদ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেশি নিচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৫ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। সাধারণত  জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বোরো চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। ধান রোপণের আগে জমিতে টিএসপি ও এমওপি সার ছিটালে ফলন ভালো হয়। তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাহিদা মাফিক সার না পাওয়ায় কৃষকেরা উচ্চমূল্যে সার কিনছে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে।

বিসিসিআই অনুমোদিত ডিলার সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মাসে ৩১.২০ টন টিএসপি, ৬২.৪০ টন এমওপি (পটাশ) ও ৫৭৭.৮০ টন ডিএপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব সার ১২ জন সরকার অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। সরকার টিএসপি সারের দাম প্রতিবস্তা এক হাজার ১০০ টাকা বেঁধে দিলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায়। প্রতিবস্তা এমওপি বা পটাশ সার ৭৫০ টাকার জায়গায় ৯৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। কৃষকদের অভিযোগ, ডিলারের কাছে চাহিদা মত সার পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতারা তাঁদের কাছ থেকে সারের দাম বেশি নিচ্ছেন। তবে তাঁরা কোনো রসিদ দিচ্ছেন না। রসিদ চাইলে, তাদের কাছে সার বিক্রি করছে না।

সুন্দর খাতা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান (৩৫) বলেন, ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা তাঁদের দোকানে যে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রেখেছেন সেই দামে সার বিক্রি করছেন না। তাঁরা প্রতিকেজি টিএসপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং এমওপি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করছেন। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

রামডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মমিনুর ইসলাম বলেন, সারের জন্য ডিলারদের দোকানে দোকানে তিন দিন ঘুরেও সার নিতে পারিনি। দাম বেশি না দিলে সার পাওয়া যায় না।

বাবুরহাট বাজারের খুচরা সার বিক্রেতা শফিউল ইসলাম বলেন, ইচ্ছা করে সারের দাম বেশি নেওয়া হয় না। ডিলাররা আমাদের কাছে বেশি দাম নেওয়ায় আমরাও বেশি দামে সার বিক্রি করছি।

উপজেলার বিসিআইসির সারের ডিলার আজিজুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় বাজারে সারের সংকট তৈরি হয়েছে। এ সুযোগে কোনো কোনো ডিলার ও খুচরা বিক্রেতা অন্য উপজেলা থেকে সার কিনে বেশি দাম নিতে পারেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দর আলী বলেন, এ বছর সারের কোনো সঙ্কট নেই, পর্যাপ্ত সার আছে। কোনো ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে বেশি মূল্যে সার বিক্রি করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে কি না, তার খোঁজ নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন