ঢাকা | মঙ্গলবার
২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বেসরকারিখাতের অসামান্য অবদান রয়েছে- তথ্যমন্ত্রী

২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হবার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে দুই বছর আগেই বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছেছে। একই ধারাবাহিকতায় ২০৩১ সালের আগেই উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবে বাংলাদেশ। সেজন্য বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে।

গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে মুজিব কর্নার ও ডিরেক্টরস লাউঞ্জের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন, রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের নানামুখী কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা বেশকিছু দুর্লভ আলোকচিত্র ও তাঁর জীবন আদর্শের ওপর রচিত কিছু বইয়ের একটি লাইব্রেরি দিয়ে এফবিসিসিআই’র দৃষ্টিনন্দন মুজিব কর্নার সাজানো হয়েছে। মুজিব কর্নারের পাশেই এফবিসিসিআই পরিচালকদের জন্য লাউঞ্জ স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পী হায়দার হোসেনের উপস্থিতিতে কোভিড সচেতনতামূলক সঙ্গীতও প্রকাশ করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনায় মুজিব কর্নার স্থাপনের জন্য এফবিসিসিআই’র নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বেসরকারি খাত তথা দেশের ব্যবসায়ীদের অসামান্য অবদান রয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ধারণ করে এ দেশের ব্যবসায়ী সমাজ দেশ বিনির্মাণে আরো বেশি অবদান রাখবেন বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়, তখন অনেকেই এ দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যা দিয়েছিলো। এ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ ডলার হতে অন্তত ১’শ বছর লাগবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেক বিখ্যাত অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু সব ভবিষ্যদ্বানী মিথ্যা প্রমাণ করে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো একটি দেশ। এখন এ দেশের মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলারের ওপর। আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বের ৯২তম অবস্থানে থাকা এ দেশ এখন বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রয়ক্ষমতার দিক দিয়ে ২৯তম এবং জিডিপির হিসাবে ৩১তম শীর্ষ অর্থনীতির দেশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাস অনুযায়ী শিগগির বিশ্বের ২৪তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে কম মাথাপিছু জমির দেশ হবার পরেও, বাংলাদেশ ধান, মাছ, সবজি, আলুসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ।

প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেত্বত্বে এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, কোভিড মহামারিতে দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই অন্যান্য দেশের তূলনায় বাংলাদেশে ভালো অবস্থানে আছে।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ভবিষ্যতেও বহাল থাকলে, নির্ধারিত ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ধারাবাহিকতা রক্ষা করে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশ ও উন্নয়ন বিরোধী সমালোচনা না করার আহ্বান জানান ড. হাছান মাহমুদ।

এর আগে সভাপতির বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। এ সময় তিনি শিল্পখাতে দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি মোকাবিলায় শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান। বলেন, তৈরি পোশাকশিল্পসহ অনেক খাতে দক্ষ মানুষের অভাব রয়েছে। শিক্ষিত লোকবল থাকলেও, শিল্পের চাহিদা মাফিক জনবল পাওয়া যাচ্ছে না।

নিম্নআয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন।

এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হকের সঞ্চালনায় সূচনা বক্তব্যে সিনিয়র ভাইস প্রসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩ বছর ৭ মাসের দেশ পরিচালনায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন জোর দিয়েছিলেন।

আরো বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মোঃ হাবীব উল্লাহ ডন, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু আলম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী ও এম.এ রাজ্জাক খান রাজ প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন