মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা নেমেছে। শেষ সময় কেনাবেচায় ব্যস্ত ছিলেন ক্রেতা বিক্রেতা। সকালে ভিড় কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। এদিকে মেলায় নানা অফার থাকায় শেষ দিকে বেড়েছে বিক্রি। দেশি বিদেশি প্রতিটি স্টলেই নানা অফারের ছড়াছড়ি। মেয়েদের পোশাক, গহনা, গৃহস্থালি পণ্যের দোকানগুলোতে ভিড় তুলনামূলক বেশি।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসরে ১৬ মিলিয়ন ডলার বা ১৩৮ কোটি টাকার রফতানি আদেশ এসেছে। একইসঙ্গে এক মাসে এ মেলায় পণ্য বিক্রি থেকে ভাট আদায় করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা।
সোমবার রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআইয়ের জসিম উদ্দিন ও বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেলার ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্যের রফতানি আদেশ এসেছে। এ সময়ে মোট ৪০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এ বিক্রি থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভ্যাট আদায় করা হয়েছে।
বাণিজ্য মেলায় অবস্থিত কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (পূর্ব) এর অস্থায়ী অফিস স্টলগুলো থেকে ভ্যাট আদায়ের কাজটি করেছে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক অনলাইনে ভ্যাটের চালান সংগ্রহ করেছে। আগে এটি ম্যানুয়ালি করা হতো।
এবার ইসলামী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের স্টলে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের (এসিএস) মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ভ্যাট, ট্যাক্স ও বিভিন্ন ফি জমা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিদিনের লেনদেনের ভ্যাট-ট্যাক্সসহ অন্যান্য ফি এই দুই স্টলে নিয়মিত জমা দিতে পারতেন।
এবার প্রথম রাজধানীর উপকণ্ঠে নতুন শহর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি)আয়োজিত হয় মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।
গত ১ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এবারই প্রথম স্থায়ী ভেন্যুতে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগে এই মেলা হতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬০টি স্টল এবং ১৫টি ফুড স্টল দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। যা অন্য বছরের তুলনায় অর্ধেক। তাছাড়া মেলায় ১১টি বিদেশি স্টল অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেন, অনেক প্রতিকুল পরিবেশে এবারের বাণিজ্য মেলা শেষ হলো। দেশের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য সরকার সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এবছর ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করা সম্ভব হবে। আগামী ২০২৪ সালে দেশের রপ্তানি ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে আমরা কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
আনন্দবাজার/শহক