মেট্রোরেলের সর্বশেষ ভায়াডাক্ট সেগমেন্ট বসানোর মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো প্রকল্পের পুরো ২০ দশমিক ১ কিলোমিটারের কাজ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৫৮২ ও ৫৮৩ নম্বর পিয়ারের ওপর সর্বশেষ ভায়াডাক্ট সেগমেন্টটি স্থাপন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো উত্তরা থেকে মতিঝিলের ঢাকার প্রথম উড়াল রেলপথ।
মেট্রোরেলের নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেলের কাজ শেষ হওয়ার মাধ্যমে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে এবং আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিলের মধ্যে যাত্রী পরিবহন শুরুর যে পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়নের দিকে আমরা এক ধাপ এগিয়ে গেলাম। তিনি বলেন, উত্তরা সেক্টর-৩ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ‘ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ৬’ নামের রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই বছরের ডিসেম্বরে সেকশনটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার মেট্রোরেলের ভায়াডাক্ট স্থাপনের কাজ শেষ হয়। সেদিনের অনুষ্ঠানে চলতি বছরের ডিসেম্বরে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেল চালুর লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিটের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের মধ্যে পুরো রেললাইনটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকায় যানজটমুক্ত কার্যকর পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানের (এসটিপি) আওতায় এবং জাপানের সহায়তায় ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট উন্নয়ন প্রকল্প (এমআরটি লাইন-৬) অনুমোদন দেওয়া হয় ২০১২ সালে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালের মধ্যে দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার মেট্রো রেল নির্মাণ করা হবে। তবে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম অংশ আগেভাগেই চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতিঝিল থেকে মেট্রোর এ লাইনটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে লাইনের দৈর্ঘ্য দাড়াবে ২১ দশমিক ৭০ কিলোমিটারে।
প্রসঙ্গত, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেলের পাশাপাশি ঢাকায় আরো পাঁচটি মেট্রোরেল গড়ে তুলবে সরকার, যেগুলোর কোনোটি হবে উড়ালপথে, কোনোটি পাতালপথে, কোনোটি আবার উড়াল-পাতাল সমন্বয় করে নির্মাণ করা হবে। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যেই সবগুলো মেট্রোরেল বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার।
আনন্দবাজার/শহক