ঢাকা | রবিবার
২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেশি লাভ

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেশি লাভ

টমেটো চাষ

নারীদের পাশাপাশি চা শ্রমিকদের কর্মসংস্থান

মৌলভীবাজারের সদর ও তার আশপাশের এলাকায় অসময়ের গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন অনেক চাষি। চলতিবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে বর্ষাকালীন এ টমেটোর। টমেটোর ফলনে খুশি চাষিরা। টমেটো চাষে সাধারণ নারীদের পাশাপাশি চা-বাগানের অনেক নারীশ্রমিকও কাজ করছেন। এতে বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানও হচ্ছে।

সরেজমিনে সদর ও কমলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, মাঠভরা টমেটো খেত। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা টমেটো। কিছু গাছে ফুল ফুটছে। শুধু এ খেতে নয়। চা-বাগান এলাকার এ মাঠের কাছে কৃষকরা জমি ইজারা নিয়ে টমেটোর চাষ করেছেন। এদের বাড়ি চাষের জায়গা থেকে কয়েক কিমি. দূরে। এভাবে বিভিন্ন বছর তারা বিভিন্ন স্থানে জমি ইজারা নিয়ে টমেটোর চাষ করেন। এরই মধ্যে পাকা টমেটো বিক্রি চলছে।

শ্রমিক আয়মান আলী বলেন, আবদুল মোতালেবের খেতে তারা ৩০ জন নারি কাজ করেন। প্রতিদিন ২০০ টাকা করে মজুরি পান। এ দিয়ে তাদের সংসারে ভালো সহযোগিতা হয়। যেহেতু করোনা মহামারিতে অন্যকোনো কাজ নেই। তাই এ দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে মোটামোটি চলে যায়।

চাষিরা জানায়, পাত্রখোলা ক্লাব এলাকায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েকজন চাষি আলাদাভাবে প্রায় ১০০ কিয়ার (বিঘা) জমি এক বছরের জন্য লিজ নিয়ে টমেটোর চাষ করেছেন। প্রতি কিয়ার (বিঘা) জমি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন তারা।

আবদুল মোতালেব আরও জানান, গত কয়েক বছর ধরে এখানে তরমুজ, শসা ও টমেটোর চাষ করছেন। এবার তিনি পাঁচবিঘা জমিতে শুধু টমেটোর চাষ করেছেন। প্রতিটি চারা আট থেকে ১০ টাকা দরে ক্রয় করেন। এতে একবিঘা জমিতে শ্রমিক, বাঁশ, চারা, সার ও কীটনাশক বাবদ খরচ হয় প্রায় লাখ টাকা। তিনি এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। এখনও মাঠে রয়েছে অনেক ফসল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতিবছর ৭৩ হেক্টর জমিতে গ্রাফটিং টমেটো চাষ হয়েছে। তন্মধ্যে কমলগঞ্জে ৫০ হেক্টর আর বাকিগুলো অন্যান্য উপজেলায়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৯৯০ টন। প্রতিহেক্টরে প্রায় ২২ টন টমেটো উৎপাদিত হয়েছে। কলম করা চারা বিক্রি করেও অনেক চাষি লাভবান হয়েছেন। একজন কৃষক ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছেন। জেলার মধ্যে কমলগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বেশি টমেটোর চাষ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, টমেটোর ফলন এবং দাম দুটো ভালো। প্রথমদিকে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হয়েছে। আর এখন ৭০-৮০ টাকা টমেটোর কেজি। বারি-৪ ও ৮ জাতের এ টমেটোর একটি গাছে গড়ে ৬ থেকে ৭ কেজি ফলন পাওয়া যায়।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন