খুলনা-যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে মজুত আছে ৩০ হাজার ৪৬২ মেট্টিকটন পাটপণ্য।যার বাজারদর ২৭০ কোটি টাকা । সুদানে রফতানি বন্ধ থাকার কারণে মজুত হয়েছে এতো পরিমাণের পণ্য । অথচ ৫৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে পাটকল শ্রমিকদের ১০-১১ সপ্তাহের মজুরি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বাবদ ।
মূলধন না থাকার কারনে পাটকলগুলোয় কাঁচা পাটের মজুত একেবারেই নেই। ফলে কমে গেছে উৎপাদন। বর্তমানে উৎপাদন ক্ষমতার ২০ ভাগ উৎপাদন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অদক্ষতায় মিলগুলোতে মূলধনের অভাব সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়।
বিজেএমসি খুলনা অঞ্চলের লিয়াজো কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিয়া বলেন, খালিশপুরের ক্রিসেন্ট জুট মিলে ৮ হাজার ১৩০ মেট্রিকটন, প্ল্যাটিনাম জুট মিলে ৬ হাজার ১১৭ মেট্রিকটন, যশোর জুট ইন্ডাজস্ট্রিতে (জেজেআই) ৩ হাজার ৩৯৬ মেট্রিকটন ও কার্পেটিং জুট মিলে ৬০০ মেট্রিকটন, খালিশপুর জুট মিলে ৬ হাজার ৫৯৪ মেট্রিকটন ও দৌলতপুর জুট মিলে ৯৭৮ মেট্রিকটন, স্টার জুট মিলে ১ হাজার ১১৬ মেট্রিকটন, আলিম জুট মিলে ১ হাজার ৪৭৪ মেট্রিকটন ও ইস্টার্ন জুট মিলে ২ হাজার ৫৭ মেট্রিকটন পণ্য মজুত রয়েছে।
খুলনার শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের বকেয়াসহ সার্বিক সঙ্কটাপন্ন অবস্থা সম্পর্কে অধিদফতরের মহাপরিচালক, শ্রম সচিবকে ইতিমধ্যে অবহিত করা হয়েছে। বিজেএমসির কোনও তহবিল না থাকার ফলে বকেয়া পরিশোধে উদ্বেগ এর তৈরি হয়েছে। মজুত পাটপণ্য বিক্রি না হওয়ার ফলে এ সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
প্ল্যাটিনাম জুট মিল সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন জানান, কাজ করেও শ্রমিকরা নিয়মিত মজুরি ঠিকমত পাচ্ছেন না। এ কারণে শ্রমিক পরিবারে চরম আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন নিয়েও টালবাহানা করছেন কর্তৃপক্ষ। দাবি আদায়ে অসহায় শ্রমিকরা এখন মরিয়া হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সরদার হামিদ জানান, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের শ্রমিকরা ২৫ নভেম্বর ভুখা মিছিল করেছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি সুইপাররাও পে-কমিশনের আওতায় বেতন পাচ্ছেন। অথচ শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে চলছে টালবাহানা।
আনন্দবাজার/এফআইবি