ঢাকা | শনিবার
২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একটু বাড়ার পর টানা পতন

একটু বাড়ার পর টানা পতন
  • শেষ দিনে পতন ৬৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সব ধরনের সূচক গতকাল বৃহস্পতিবার পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া দুই স্টকের ৬৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। তবে এদিন ডিএসইর লেনদেন পরিমান বাড়লেও সিএসইর কমেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) পুঁজিবাজারের কারসাজিকারীদের নজরদারিতে আনাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয় অর্থমন্ত্রণালয়। খবরটি জড়িয়ে গেলে গত মঙ্গলবার সূচক সামান্য বেড়েছে। এরপর পরের দুইদিন ধরে সূচক পতন চলছে। এই দুইদিন শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রয়ের চাপ বেশি ছিল। ফলে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার পতন হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকাল সিরামিক, পাট এবং সেবা আবাসন খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। এরপর আর্থিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, বস্ত্র, ওযুধ রসায়ন, খাদ্য আনুষঙ্গিক, জ্বালানি শক্তি, বিবিধ, পেপার, চামড়া এবং সিমেন্ট খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দর পতন ছিল। তবে এদিন ডিএসইতে বীমা এবং বিবিধ খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর উত্থান সবচেয়ে বেশি ছিল। এদের মধ্যে বীমা খাতের ৫২টির মধ্যে ৪৪টি এবং আইটি খাতের ১১টির মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর উত্থান ছিল।

সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার নন ব্যাংকিং খাতের ২৩টির মধ্যে ২০টি, ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের ৪২টির মধ্যে ৩৩টি, বস্ত্র খাতের ৫৮টির মধ্যে ৪৫টি, ওযুধ রসায়ন খাতের ৩২টির মধ্যে ২৯টি, ব্যাংক খাতের ৩২টির মধ্যে ১৮টি, খাদ্য আনুষঙ্গিক খাতের ২০টির মধ্যে ১৮টি, জ্বালানি শক্তি খাতের ২৩টির মধ্যে ১৯টি, বিবিধ ১৪টির মধ্যে ১২টি, পেপার ৬টির মধ্যে ৫টি, চামড়া ৬টির মধ্যে ৫টি এবং সিমেন্ট খাতের ৭টির মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর পতন ছিল। একই মন্দা অবস্থা অপর পুঁজিবাজার সিএসইতেও। এদিন সিএসইর ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এদিন দুই স্টকের বেশিরভাগ খাতের কোম্পানির শেয়ার দর কমাকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন তারা।

দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৮০১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৭৬৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে বেড়েছে ৮২টির, কমেছে ২৬১টির বা ৬৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং পরিবর্তন হয়নি ৩৫টির দর। টাকার অংকে এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানি হলো- ফরচুন সুজ, বেক্সিমকো, বিকন ফার্মা, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ওয়ান ব্যাংক, সোনালী পেপার, জেনেক্স ইনফোসিস, সাইফ পাওয়ারটেক, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, জিএসপি ফাইন্যান্স।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭০২ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ২৪ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট ও ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১০ দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৫১১ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে ও ১ হাজার ৪২৩ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে।

অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বুধবার লেনদেন হয়েছিল ১১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৭টির কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৮৯টির, কমেছে ১৭৭টির বা ৫৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং পরিবর্তন হয়নি ৩১টির কোম্পানির। টাকার অংকে এদিন সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানি হলো- লার্ফাজ হোল্ডসিম, ইস্টার্ন ব্যাংক, আইসিবি, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, ওয়ান ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, রবি, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, জিএসপি ফাইন্যান্স।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৩৮ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১৩ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৪০ দশমিক ৩২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৮৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট ও সিএসআই সূচক ৯ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৪৬৩ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৮০৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৫১ পয়েন্টে ও ১ হাজার ২০৬ দশমিক ৩২ পয়েন্টে।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন