ঢাকা | শুক্রবার
৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে শখের ছাদ বাগান

পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে শখের ছাদ বাগান

করমচা, কামরাঙ্গা, কমলা, কদবেল, ড্রাগন, মিষ্টি তেঁতুল, থাইড্রপ আম, তেঁতুল, থাই জাম, বেদানা, ভেরিকেট জামরুল, লিচু, সফেদা, নাশপাতি, জলপাই, বরই, আপেল, চেরি, কাঁঠাল, লঙ্গন, মিরাকেল, সাদা আম, সূর্য ডিম, হানি ডু, ব্রুনাই কিং, রেড ম্যাংগো, অভিসারিকা আম, সুইট লেমন- আনেক অনেক জাতের ফল ছাদে বাগানে।

রাজশাহীর মহিষবাথান এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা সিহাব উদ্দিনের বাড়ির ছাদ বাগানে এমন সব ফলের সমাহার। শুধু ফলই নয়, তার বাগানে আছে অনেক জাতের ফুলের গাছ। একদিনে সৌখিনতা, অন্যদিকে পরিবারে পুষ্টির চাহিদা মেটানো। দুটোই চলে তার ছাদ বাগান থেকে।

সিহাব উদ্দিনের বাড়ির ছাদ বাগানে থরে থরে সবুজ গাছপল্লবে সাজানো পুরো ছাদ। তার ছাদ বাগানে জাম, জামরুল, এলাচী লেবু, ব্যানানা ম্যাংগো, পেঁপে, গৌড়মতি আম, সফেদা, মরিচ, কাগজি লেবু, মিষ্টি জলপাই, বাতাবি লেবু, বিভিন্ন ধরনের পেয়ারা, কমলা, কালো পাতার বø্যাক বক্স আম, কলা, দেশি জাম ও অরুনা আমসহ আরও অনেক ফলের গাছ রয়েছে।

শুধু ফল নয়, রয়েছে বিভিন্নরকম ফুল ও মসলার গাছ। ছাদের কোনায় কোনায় স্থান করে নিয়েছে অলস্পাইস, তেজপাতা, দারুচিনি, গোলাপজামনসহ আরও বেশ কিছু মসলাজাতীয় গাছ। প্রায় ৮০ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারি গাছ বাড়িয়ে দিয়েছে এ বাগানের সৌন্দর্য। এগুলোর মধ্যে নীল অপরাজিতাসহ বিভিন্ন রঙের অপরাজিতা, ফায়ার বল, বিভিন্ন ধরনের জবা, এ্যাডেনিয়াম, এলামুন্ডা, ৩০ থেকে ৩৫ প্রজাতির গোলাপ, লাইলী-মজনু, বিভিন্ন ধরনের পাতা বাহার, সাইকাস, এ্যারোমেটিক জুঁই, টগর, কামিনী, মধুমালতি, মাধবীলতা, বিভিন্ন ধরনের অর্কিড ও ক্যাকটাস উল্লেখযোগ্য।

অনেক পরিশ্রম করে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন এ ছাদ বাগান। এ কাজে সিহাব উদ্দিনের স্ত্রী শামীম আরা সহযোগিতা করে আসছেন। বলতে গেল দুইজন মিলেই গড়ে তুলেছেন শখের ছাদ বাগান। কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ পেয়েছেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পুরস্কার। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে দেশসেরার পুরস্কার গ্রহণ করেন তিনি।

সিহাব উদ্দিন ও তার স্ত্রী শামীম আরা জানান, শৈশব থেকেই গাছের প্রতি তাদের প্রচন্ড দুর্বলতা ছিল। সেই ভালোলাগা থেকেই এ শখের বাগান। বিয়ের পর স্বামী শিহাব উদ্দীনের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় বাড়ির ছাদে গাছ লাগাতে শুরু করেন তিনি। ২০১১ সালের শেষের দিকে মাত্র কয়েকটি ফুল-ফল এবং সবজির গাছ দিয়ে বাগান শুরু করেন। ধীরে ধীরে বেড়েছে বাগানের পরিসর।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে বর্তমানে সিহাব উদ্দিনই বাগানের পরিচর্যায় সময় বেশি দেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। বাগানের পরিচর্যা করেই এখন সময় কাটে তাদের।

সিহাব উদ্দীন জানান, সারাবছর পরিবারে সবজি ও ফলের চাহিদা মেটে এই ছাদবাগান থেকে। সেইসাথে আতিথেয়তা তো আছেই। অবসরের পর পুরো সময়টাই তিনি বাগানের পরিচর্যায় লাগান।

বাগান প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সিহাব উদ্দিন বলেন, ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে মাটি পাওয়ার বিষয়টি বেশ সমস্যায় ফেলে। পদ্মা নদীর পলিমাটি সংগ্রহ করা হয়। সেই মাটির সঙ্গে গোবর, মিশ্র সার যোগ করা হয়। এরপরে সেখানে গাছ লাগানো হয়। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর খানিকটা চেষ্টা থাকলে অনেকেই গড়ে তুলতে পারেন চমৎকার একটি বাগান। যখন ফুল-ফলে আপনার বাগান ভরে উঠবে, তখন আপনার মনও স্বর্গীয় প্রশান্তিতে ভরে যাবে।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন