- নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার শঙ্কা
দেশে কয়লার বাজারের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৫০ লাখ টন। তবে চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন কম হওয়ায় আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। দেশে উত্তোলিত কয়লা বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির জন্য নির্ধারিত থাকায় ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানির মাধ্যমে দেশীয় চাহিদা পূরণ হয়।
ট্রেন্ড ইকোনমিকসের তথ্য অনুযায়ী, গেল বছরের ১ ডিসেম্বর প্রতি টন কয়লার দাম ৭২ ডলার হলেও বর্তমানে দাম ১৫০ ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে। গেল এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম ১০৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ কারণে ইট এবং সিমেন্টের মতো অতি প্রয়োজনীয় নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে।
এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে নির্মাণ সামগ্রীর দাম আরও বাড়বে। ফলে সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো নির্মাণে স্থবিরতা আসতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। উৎপাদন খরচ বাড়ার শঙ্কায় ইতোমধ্যে ইটভাটা মালিক সমিতি ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ইট পোড়ানো বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে কয়লার দাম কমাতে সরকারকে কয়লা আমদানিতে শুল্ক কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
কয়লা আমদানিকারকরা বলছেন, চীনসহ কয়েকটি দেশে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কয়লার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কয়লা প্রতি টন ৫৫ থেকে ৬৬ ডলারে আমদানি করা হতো তা বর্তমানে ১৫০ ডলারে পৌঁছেছে। ক্রেতারা এই দামে কিনতে পারলে আমরা সরবরাহ করতে প্রস্তুত। তবে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে গেছে। দামি কয়লা দিয়ে উৎপাদন চালু করা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত কারখানা মালিকরা।
খাতসংশ্লিষ্টতের তথ্যমতে, গত মৌসুমে ইটভাটা মালিকরা প্রতি টন কয়লা আট হাজার থেকে নয় হাজার টাকায় কিনেছেন। করোনা মহামারির কারণে চলতি মৌসুমে কয়লা আমদানিতে সংকটের সৃষ্টি হয়। ফলে স্থানীয় বাজারে প্রতি টন কয়লার দাম ১৯ হাজার থেকে ২২ হাজারে গিয়ে পৌঁছে। দাম বাড়ায় ইটভাটা মালিকরা যথাসময়ে উৎপাদন শুরু করতে পারছেন না। গত মৌসুমে উৎপাদিত ইটের মজুদও এখন শেষ হতে চলেছে। এ অবস্থায় ইটভাটা চালাতে মালিকরা বেশি দামে কয়লা কিনলে ইটের দাম বাড়বে।
ইটভাটা মালিকরা বলছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কয়লা বাণিজ্যে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করসহ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর ও শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। শুল্ক ছাড় দেওয়া হলে অপেক্ষাকৃত কম খরচে কয়লা ব্যবহার করা যাবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
আনন্দবাজার/শহক