রঙিন মাছ চাষ করে ভাগ্য বদলেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের সৌখিন মাছ চাষি শেখ আসাদুজ্জামান বিপ্লবের। বেকার বিপ্লব নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রঙিন মাছের খামারি হিসেবে। তার সফলতা দেখে এ মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধা থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের মহিমাগঞ্জ বাজারে অবস্থিত তার মাছের খামারটি। বালু মাটির ওপরে মাছের জন্য মাটির চাড়ি বসানো হয়েছে। এতে মাছের উৎপাদন ও বিক্রি দুটোই চলে। শখের বসে গাপ্পি আর প্লাটি মাছ দিয়ে মাছের খামার শুরু করেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত এ্যাকুয়া ফিশল্যান্ড পুকরে এখন ১৩ জাতের ৩৫ প্রজাতির বর্ণিল রঙিন মাছের চাষ হচ্ছে। খামারে কর্মসংস্থান সৃৃষ্টি হয়েছে অনেকের।
শেখ আসাদুজ্জামান বিপ্লব জানান, ২০১৫ সালে মাত্র ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে মাছের খামার করেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত মাছের খামারে এখন ১৩ জাতের ৩৬ প্রজাতির আকর্ষণীয় রঙিন মাছ চাষ হচ্ছে। খামারে বয়েছে মালি, গাপ্পি, প্লাটি, সোর্ডটেইল, জাপানি কইকার্প, বাটারফ্লাই কইকার্প, গোন্ডফিশ, সাটেল, এ্যাঞ্জেলসহ প্রায় ৩৫ জাতের মাছ। প্রতি পিস মাছ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। সৌখিন ক্রেতারা তার কাছ থেকে মাছ ক্রয় করেন।
প্রতিমাসে খামারে অন্তত ৩ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয় জানিয়ে বিপ্লব বলেন, শুরুতে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে রঙ্গিন মাছের ব্যবসা শুরু করলেও এখন প্রায় ৪০ লাখ টাকার কারবার গড়ে তুলেছেন। তাকে দেখে সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, পলাশবাড়িতে বেশ কয়েটি রঙিন মাছের খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামার থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে এমনকি সারাদেশে সৌখিন মৎস্য প্রেমিকরা মাছ কিনতে আসেন। শুধু তাই নয় বিক্রেতারা ঢাকা থেকে আসেন পাইকারিভাবে মাছ ক্রয় করতে।
তিনি আরো বলেন, এটি একটি সৌখিন ব্যবসা। রং বে রং এর মাছের সাথে ভালোভাবে দিন কেটে যায় তার। প্রতিমাসে খরচ বাদ দিয়ে এখন তার আয় হয় ৫০ হাজার টাকা।
মহিমাগঞ্জ বাজারের সুজন মিয়া বলেন, বিভিন্ন ধরনের মাছের খামার দেখেছি। কিন্তু এরকম সৌখিন মাছের খামার চোখে পড়েনি। বিপ্লব আমাদের গর্ব। তার সৌখিন মাছের খামার দেখতে প্রতিদিন শত শত লোক আসে। গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকতা ফয়সাল আযম বলেন, মানুষ এখন আর বেকার থাকতে চায় না। নিজের তাগিদে ব্যবসা নির্বাচন করে নিজেরাই মাছের খামার গড়ে তুলেছে। রঙ্গিন মাছ চাষি বিপ্লবকে আমরা মৎস্য বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
আনন্দবাজার/শহক