চলতি মৌসুমে আগাম সবজি চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন অনেক কৃষক। কিন্তু এ বছর অসময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য নওগাঁর মান্দা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক কৃষক আবার ক্ষতির মুখেও পড়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আবাদের জমি তৈরি সময়কালে গত ২৬ সেপ্টেম্বর অসময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে আগাম সবজিসহ তোড়া পেঁয়াজ ও সরিষার চাষ পিছিয়ে পড়েছে। এছাড়াও বৃষ্টিপাতের আগে যে সকল কৃষক আলু ও পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করে ছিলেন তারাও বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছেন ।
মান্দা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় ৫শ’ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি আবাদ করা হয়েছে। যার মধ্যে বেগুন ৮৫ হেক্টর, ফুলকপি ৯০ হেক্টর, বাঁধাকপি ৬৫ হেক্টর, মুলা ৪০ হেক্টর, শিম ৫০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ২০ হেক্টর, ক্ষিরা ৩০ হেক্টরসহ অবশিষ্ট জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করেছে কৃষকরা। পাশাপাশি ৬৫০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু ও ১৮০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে ।
উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের কৃষক দুলাল হোসেন জানান, চলতি বছর ২৫ কাঠা জমিতে ১৮-২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছি। অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে ফসল তৈরি করতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। ফুলকপিতে পচন রোগর কারণে দাম কম পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, একবিঘা জমিতে আগাম জাতের আলুর চাষ করেছি। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির কারণে গাছ ভালো হয়নি। ফলে লোকসানের মুখ পড়তে পারেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উপজেলার চকভোলাই গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান ও চকদেবীরাম গ্রামের দেলোয়ার রহমান ১০ কাঠা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব পেঁয়াজ বাজারে বিক্রির আশা প্রকাশ করেছেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের নতুন সবজি বেগুন ৫০ টাকা, ফুলকপি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পালং শাক ৪০ টাকা, গাঁজর ১০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান জানান, এ উপজেলার কুসুম্বা, মান্দা, নুরুল্লাবাদসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মাটিতে প্রচুর পরিমাণে সবজির চাষ হয়ে থাকে। কৃষকরা তাদের জমি থেকে সবজি সংগ্রহ করে স্থানীয় হাটবাজারে প্রতিদিন বিক্রি করছেন। কৃষকদের উৎপাদিত এসব সবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে।
আনন্দবাজার/এম.কে