ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈশ্বরগঞ্জে ফসলের মাঠে প্রকৃতির থাবা

কিছুতেই থামছে না কৃষকের হাহাকার। যে ফসলের মাঠে এতোদিন ছিলো সোনালী স্বপ্ন আজ সেখানে রোদে পোড়া বিমূর্ত আর্তনাদ। যতই বয়ে যাচ্ছে সময় ততই বাড়ছে ক্ষতির পরিমান। অসহায় চেয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার নেই আর। এ যেন প্রকৃতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ!

জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ধূলিঝড় ও গরম বাতাসে বোর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। গরম বাতাসের প্রভাবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে প্রায় ৫শ হেক্টর বোর ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে জরিপ চালিয়ে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারন করেছে ৩শ হেক্টর। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে চাষিদের দেয়া তথ্য মতে এ ক্ষতির পরিমাণ ৫শ হেক্টর ছাড়িয়ে যেতে পারে। গরম হাওয়া প্রবাহের আগেও ফসলের মাঠে সাদা ফুলের রেনু সম্বলিত থোকা থোকা ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছিল। ঘন্টাব্যাপী বয়ে যাওয়া গরম বাতাসের প্রবাহে সেই সোনার ফসলের মাঠ এখন বিরান ভূমিতে পরিনত হয়েছে। এ যেন ফসলের মাঠে প্রকৃতির প্রতিশোধ। স্বপ্নে ঘেরা সোনার ফসল হারা মাঠে এখন চলছে কৃষকের বুক ফাটা আর্তনাদ।

উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামের চাষি চান মিয়া, আব্দুল হাই ফকির, জাটিয়া ইউনিয়নের নিজতুলন্দর গ্রামের চাষী আবুল মিয়া, নুরুল আমিন, সোহাগী ইউনিয়নের সাহেব নগর গ্রামের চাষী আব্দুর রাশিদ, তারুন্দিয়া ইউনিয়নের চরজিতর গ্রামের চাষি ফখর উদ্দিন জানান, ৪এপ্রিল রোববার বিকেল ৫টার দিকে আকাশের দক্ষিন পশ্চিম কোণে কালো মেঘ জমে হালকা বজ্রবৃষ্টি সহ শুরু হয় ধূলিঝড় ও গরম বাতাসের প্রবাহ। চাষিরা জানান, থোর থেকে বের হওয়া সাদা ফুলের রেনু সম্বলিত ধানের শীষগুলো মাঠে দোলতে দেখা গেছে। ঝড়ের পরদিন সূর্য উঠার সাথে সাথে চাষিরা দেখতে পান ধানের শীষগুলো শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। উপজেলার সর্বত্র বোর ফসলের ভয়াবহ ক্ষতিতে শত শত চাষী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার উপজেলার বলেন, এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ঝড়ো বাতাসের সাথে গরম হাওয়ার কারণে যে ধান গুলো ফুল অবস্থায় ছিল সে ধানগুলোর বেশী ক্ষতি সাধিত হয়েছে। অত্র উপজেলায় গ্রায় ৩শ হেক্টর জমির ধানের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ এপর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল মাজেদ জানান, এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর উপর কারো নিয়ন্ত্রণ নেই। ধানের ক্ষতির সবচেয়ে স্পর্শ কাতর সময় হচ্ছে ফ্লায়ারিং পিরিয়ড। এই সময়টাতে দুর্যোগপূর্ণ হাওয়া প্রবাহিত হওয়ায় এই ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন সরকার যদি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের পূর্নবাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাহলে কৃষি বিভাগ তা বাস্তবায়নে যথাযত ব্যবস্থা নিবে।

আনন্দবাজার/শাহী/তারেক

সংবাদটি শেয়ার করুন