তাইওয়ানে টানেলের ভেতর যাত্রীবাহী একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে কমপক্ষে অর্ধশত নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৬৬ জন। শুক্রবার (২ এপ্রিল) সকালে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলে একটি সুড়ঙ্গের ভেতরে জনাকীর্ণ ট্রেন লাইনচ্যুত হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
তাইওয়ানের সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার জানিয়েছে, চারটি বগি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো উদ্ধারে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। ট্রেনটি রাজধানী তাইপে থেকে তাইটং শহরে যাচ্ছিল। ট্রেনে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদের একটা বড় অংশ ছিলেন পর্যটক। ভিড় থাকায় ট্রেনটির ভেতরে অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ট্রেনটি স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে লাইনচ্যুত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রেনের চলার পথে অন্য একটি যান চলে আসে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। কিন্তু সে যানটি কীভাবে রেল চলাচলের স্থানে এসে পড়ল সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। নিহতদের মধ্যে ট্রেনটির চালকও রয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, যেসব বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি সেখান থেকে যাত্রীরা তাদের মালামাল নিয়ে বের হয়ে লাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজন নারী যাত্রী তাইওয়ানের গণমাধ্যমকে বলেন, “হঠাৎ এক ভয়ংকর ধাক্কা লাগল, আর আমি নিজেকে মেঝেতে আবিষ্কৃত করলাম”।
“আমরা জানালা ভেঙে ট্রেনটির ছাদে পৌঁছাবার চেষ্টা করলাম”। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এটিই এযাবতকালের ভয়াবহতম ট্রেন দুর্ঘটনা।
ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রীই তাইওয়ানের ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক সমাধি উৎসব উদযাপনের জন্য যাচ্ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ আয়োজনের অংশ হিসেবে তাইওয়ানিজরা মৃত আত্মীয়-পরিজনের সমাধি পরিদর্শন করে এবং তাদের আত্মার শান্তির কামনা করে থাকে।
এর আগে ২০১৮ সালে দ্বীপটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছিলেন। এছাড়া ১৯৯১ সালে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে ৩০ জন নিহত এবং ১১২ জন যাত্রী আহত হয়েছিলেন।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ট্রেনের ভেতর আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করাই এখন তাদের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।
আনন্দবাজার/শহক