ঢাকা | শনিবার
১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলনে চাষীদের মুখে হাঁসি

চলতি বছর কুমিল্লায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনের সাথে সাথে বাজারে মিষ্টি আলুর চড়া দাম পেয়ে খুশি এখানকার চাষীরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কুমিল্লার এ আলু যাচ্ছে ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলার সতেরটি উপজেলায় এবার মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৫৬০ হেক্টর। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলুও চাষ করেছেন চাষীরা। তবে স্থানীয় জাতের আলুর ফলনই বেশি হয়েছে বলে জানান আলু চাষীরা।

চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মিষ্টি আলুর চারা বপন শুরু হয়। ফাল্গুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে থেকে মিষ্টি আলু মাটির নিচে পরিপক্ক হয়। আর চৈত্র ও বৈশাখ মাসে থাকে আলু তোলার।

মিষ্টি আলুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত জেলার বুড়িচংয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেত জুড়ে চলছে মিষ্টি আলু তোলার উৎসব। রোদের তেজ উপেক্ষা করে পুরুষেরা কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে আলগা করছেন। আর মহিলা ও শিশুরা আলু কুড়িয়ে এক জায়গায় স্তুপ করছেন। মিষ্টি আলু নিতে আসা ব্যাপারীরা ক্ষেতে বসেই আলু মেপে বস্তায় ভরে ট্রাকে তুলছেন।

স্থানীয় কৃষক রমিজ মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করেছি। প্রতি একরে ২৫০ মণ করে দেড় একর জমিতে ৩৭৫ মণ মিষ্টি আলুর ফলন হয়েছে। বাজারেও আলুর চড়া দাম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি মণ মিষ্টি আলু পাইকারি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। দেড় একর জমিতে চারা বপন ও আলু তোলা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। লাভ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা।

মিষ্টি আলু চাষী রকিব উদ্দিন, আলী মিয়া, মনির মিয়া বলেন, আগে এসব জমিতে বাদাম ও মিষ্টি লাউ করতাম। এতে লাভ হতো না। চলতি বছর আমরা মিষ্টি আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি।

নোয়াখালীর বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী থেকে আসা এক মিষ্টি আলুর পাইকার লিটন সরকার বলেন, নোয়াখালীতে কুমিল্লার মিষ্টি আলুর চাহিদা বেশি। কারণ ওই আলু বালু মাটিতে হওয়ায় মিষ্টি হয় খুব বেশি। এই মিষ্টি আলু নোয়াখালীতে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।

বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ রশীদ বলেন, এ বছর মিষ্টি আলু উৎপাদন ভালো হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জমির অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আগামী বছর আরও বেশি পরিমাণ মিষ্টি আলুর চাষ হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন