শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে ঐতিহ্যবাহী আত্রাই নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে সবুজের সমারোহ। নদী মাত্রিক এলাকা হিসেবে নদীর দুই তীরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দোল খাচ্ছে সবুজ পাতা। কোথাও ভুট্টা কোথাও আলূ কোথাও বাদামসহ বিভিন্ন রবিশষ্যে এখন দোলা খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।
৮ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আত্রাই উপজেলা। উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৭ ইউনিয়নেরই বুক চিড়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি থৈ থৈ করলেও শুস্ক মৌসুমে নদীর চরসহ দুই কূলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে থাকে। বিশেষ করে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের শলিয়া, তাড়ানগর, বাউল্লা, রায়পুর, শাহাগোলা ইউনিয়নের রসুলপুর, জাতোপাড়া, ভোঁপাড়া ইউনিয়নের সদুপুর, মহাদিঘী, কাশিয়াবাড়ি, ভরতেঁতুলিয়া, আহসাগঞ্জ ইউনিয়নের চৌরবাড়ি, বেওলা, কুমঘাট, পাঁচুপুর ইউনিয়নের মধুগুড়নই, পাঁচুপুর, মালিপুকুর, পারগুড়নই, গুড়নই, বিশা ইউনিয়নের বৈঠাখালী, উদয়পুর, খালপাড়া পারমোহনঘোষসহ বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার কৃষক নদীর তীরে তাদের জমিতে আলু, ভুট্টা, বাদামসহ বিভিন্ন প্রকারের ফসল ও শাকসবজি চাষ করেছেন। এসব এলাকার নদীর দুই তীর এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। বিশেষ করে আলু ভুট্টা ও বাদামের সবুজ গাছ কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক ফুটিয়ে তুলেছে।
এদিকে গত রবি মৌসুমে কৃষক আলু চাষে লাভবান হওয়ায় এবার অধিকহারে আলু চাষ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও ভাল পরিচর্যায় এবারও আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা মনে করছেন।
উপজেলার সদুপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের মাঠে চৈতালী ফসল তেমন হয়না শুধু ধানের জন্যই আমাদের মাঠ বিখ্যাত। তবে নদীর তীরের জমিগুলোতে আলু ভুট্টা সরিষা ও বাদামের খুব ভাল ফলন হয়। এবারে আমি নদীর তীরে ৫ বিঘার অধিক জমিতে আলু চাষ করেছি। আলুর গাছ দেখে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাওছার হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের কৃষকরা এবারে পর পর দু’বার বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মধ্যে ১০ হাজারের অধিক কৃষকদের আমরা কৃষি সহায়তা প্রদান করেছি। বিশেষ করে চলতি রবি মৌসুমে কৃষকরা যাতে রবিশষ্য চাষ করে ভাল ফলন পায় এ জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সেই সাথে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বল্প খরচে ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।
আনন্দবাজার/শাহী/নাহিদ