স্বল্প পুঁজি দিয়েই চাষ করা হয় শিম। এতে বেশ লাভ হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। তাই প্রতিবছর ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চাষিরা শিম চাষ করেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে হাসি ফুটেছে শিম চাষিদের মুখে।
উপজেলার বুকচিরে প্রবাহিত কাচামাটিয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত রাজীবপুর, উচাখিলা, মাইজবাগ, মগটুলা ও আঠারবাড়ি ইউনিয়নে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে শিম। প্রায় ৭হাজার কৃষক তাদের জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে আধুনিক চাষ পদ্ধতিতে বারি-৪ ও দেশীয় জাতের শিম চাষ করেছেন। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে শিমের আশাতীত ফলন হওয়ায় আর্থিক ভাবে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। চরাঞ্চলের গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠের যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই দেখা যায় বাঁশের মাঁচায় ঝুঁলে আছে সবুজ রংয়ের শিম আর শিম। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নিবিড় বার্ষিক ফলন উৎপাদন কর্মসূচি ২০২০-২১ এর শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদন ও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১হাজার হেক্টর। তার মধ্যে অর্জিত হয়েছে ১হাজার ৫০হেক্টর। তন্মধ্যে শুধু শিম চাষ হয়েছে ৭’শ হেক্টর জমিতে আর ৩’শ ৫০হেক্টর জমিতে অন্যান্য সবজি ।
উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের শিম চাষি সামির উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের মানুষ শিম চাষ করে আসছে। শিম চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে তাদের ভাগ্য বদলিয়েছেন। তিনি ৮০শতক জমিতে দেশীয় জাতের শিম আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তিনি গড়ে ২৮থেকে ৩০হাজার টাকার শিম বিক্রি করছেন। এবছর ৩ লক্ষাধিক টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
পাইকার রমজান মিয়া বলেন, পাইকারী মূল্যে প্রতি কেজি শিম ২৫থেকে ৩২টাকায় কিনতে হয়। ক্রয়কৃত শিম বাজারে নিয়ে আসতে কেজিতে প্রায় ১টাকা খরচ হয়ে যায়। প্রতি কেজি শিম খুচরা বিক্রি করছেন ৩৫থেকে ৪০টাকায়, এতে কেজি প্রতি লাভ হয় ৫থেকে ৭টাকা ।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, নিচু জমিতে মাটি কেটে পাড় তৈরি করে সিম চাষ খুবই লাভজনক। বসতবাড়ির কাছাকাছি যেসব জমিতে সারাবছর পানি জমে থাকে, সেই সব জমিতে সর্জন পদ্ধতিতে সারাবছর সবজি চাষ করে পতিত জমি সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সহ কৃষক আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, উপজেলায় এবছর শীতকালীন শাকসবজি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক উৎপাদন হয়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের কৃষকরা উন্নত জাতের শিম চাষ করে এলাকায় বিপ্লব ঘটিয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ শিম চাষ ছাড়াও কৃষকদের সব ধরণের চাষাবাদে উন্নত প্রযুক্তির পরামর্শসহ প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করে থাকে।
আনন্দবাজার/শাহী/তারেক