করোনা ভাইরাসের জের ধরে একের পর এক বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য। বিশ্বের শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাজারে।
করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে গত মাসে অপরিশোধিত তেলের দাম কিছুটা বাড়তে দেখা গেলেও ফের বিপরীত পথে হাঁটতে শুরু করেছে পণ্যটি।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ২৬ সেন্ট বা ০.৫ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয়েছে ৪৭ দশমিক ৬২ মার্কিন ডলারে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআিই) দাম ২৩ সেন্ট বা ০.৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ১১ ডলার।
গত সোমবারও ব্রেন্ট এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম ছিল নিম্নমুখী। সেদিন ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রায় ১ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম কমেছিল প্রায় ০.৪ শতাংশ।
তবে, গত মাসে বেশ কয়েকটি করোনা ভ্যাকসিনের সুখবর আসায় আবারও চাহিদা বৃদ্ধির আশা জেগেছে তেল ব্যবসায়ীদের মনে। ফলে টানা কয়েকমাস রেকর্ড দরপতনের পর নভেম্বরে তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ।
চলতি বছর লকডাউনের কারণে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমেছে ভয়াবহভাবে। ফলে মূল্যহ্রাস ঠেকাতে বাধ্য হয়েই উৎপাদন কমিয়েছে উৎপাদক দেশগুলো। তবে এ বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে বছরের মাঝামাঝি তুমুল মূল্যযুদ্ধ শুরু হয় সৌদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যে। পরে রেকর্ড দরপতনের মুখে তেলের উৎপাদন কমাতে সম্মত হয় সৌদির নেতৃত্বাধীন ওপেক এবং রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন বাকি তেল রফতানিকারক দেশগুলো। তাদের সমন্বিত এ জোটকে ওপেক প্লাস নামে ডাকা হয়।
ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত অনুসারে, আগামী বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর কথা। তবে এখনও কিছু দেশ এর বিপক্ষে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারণে আগামী জানুয়ারিতে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়টি জটিল হয়ে উঠেছে। দেশটি জানিয়েছে, জোটের অন্য দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি বাড়লেই কেবল তারা জানুয়ারিতে তেল উৎপাদন কম রাখবে।
আগামী বছরের শুরুতে তেলের উৎপাদন বাড়ানো হবে নাকি কম উৎপাদনের সিদ্ধান্ত আরও দীর্ঘায়িত হবে এ নিয়ে গত রবিবার আলোচনায় বসেছিলেন প্রধান তেল উৎপাদক দেশগুলোর মন্ত্রীরা। তবে ওই বৈঠকে ফলপ্রসূ কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি। এ নিয়ে মঙ্গলবার আবারও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস