বছরের পর বছর প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বন্ধের পথে সরকারি ছয়টি চিনিকল। বাকি নয়টির অবস্থাও নাজেহাল। সংকটের মূলে প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে দায়ী করে শ্রমিক নেতারা বলছেন, এটি দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্র।
এছাড়াও ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক অদক্ষতা, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত এই ছয় প্রতিষ্ঠান লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে করছেন কয়েকজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।
দরজা থেকেই প্রতি মাসে সাড়ে ৪ কোটি টাকার চিনি বিক্রি করছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন-বিএসএফআইসি। তৃণমূলে কোনও পণ্যের এই রকম চাহিদা থাকার পরও বছরের পর বছর চিনিকলগুলো লোকসানের ঘানি টানছে। ধুঁকছে সরকার, শ্রমিক ও আখচাষিরা।
চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন তথ্যানুযায়ী, গত পাঁচ অর্থবছরে ১৫টি চিনিকলে ৩ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে সরকার। এ সময় কেজি প্রতি চিনি উৎপাদনে সর্বনিম্ন ১৯০ টাকা থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। অথচ বাজারে তার সর্বোচ্চ দর ৭০ টাকা। এই লোকসানি হাতি পুষতে না পেরেই এবার ছয়টি চিনিকল বন্ধ করবে সরকার, এমন আশঙ্কা শ্রমিকদের।
এ বছর সরকারি অর্থ সহায়তা না পাওয়ায় লেজে গোবরে অবস্থায় বিএসএফআইসি। অর্থ সংকটে চলতি মৌসুমে আখচাষিদেরও দেয়া যায়নি ঋণ। করপোরেশন মনে করছে, এতে কমতে পারে আখ উৎপাদন, সংকট বাড়তে পারে আরও।
বিএসএফআইসির সচিব কৃষিবিদ মো. আবদুল ওয়াহাব বলেন, আমাদের চিনি সব জায়গায় তেমন বিক্রি হচ্ছে না। যার কারণে, চিনিকলগুলো চালাতে গিয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তবে, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার জানান, কোনও মিল বন্ধের পরিকল্পনা নেই সরকারের।
দেশের ১৮ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে সবশেষ মাড়াই মৌসুমে সরকারি মিলগুলোর মোট উৎপাদন মাত্র ৮২ হাজার টন চিনি। অথচ, করপোরেশনের ঘাড়ে ৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণের সঙ্গে, চেপে আছে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আর আখচাষিদের বকেয়া সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা।
সূত্র : সময়
আনন্দবাজার/ইউএসএস