মাইগ্রেন কমবেশি অনেকেরই আছে। তবে এই ব্যথার কারণে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। ফলে মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনীগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়। তাই মাথাব্যথার সাথে বমি কিংবা বমি বমি ভাব দেখা দেয় অনেক ক্ষেত্রে।
তবে পুরুষের থেকে নারীদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। নারীর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণেমাইগ্রেনের প্রকোপ অনেক বেশি। তাই অনেক মেয়ের বয়ঃসন্ধিক্ষণে ১ম ঋতুস্রাবের সাথেই মাইগ্রেনের সমস্যাও পাশাপাশি শুরু হয়। আবার অনেকের মেনোপজের পরে এটা ভালো হয়ে যায়। তবে অনেক সময় ধরে পেট খালি থাকলে মাইগ্রেন শুরু হতে পারে। কারণ খালি পেটে থাকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় যা মাইগ্রেনের সমস্যাকে আরও বেড়ে যায়।
রোদে ঘোরাঘুরির করলেও হতে পারে মাইগ্রেন। এছাড়াও অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে থাকে। চাপ নিয়ে একটানা কাজ করলে মাইগ্রেনে আক্রান্ত হওয়ার অনেক ভয় থাকে। তাই মানসিক চাপ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। খুব মানসিক চাপে থাকলে এককাপ লেবু চা পান করলে আরাম পাবেন।
অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার খাওয়া- আমরা যখন অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাই তখন আমাদের রক্তের সুগারের মাত্রা বাড়ে। ফলে যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ইনসুলিনের উৎপাদন হতে থাকে। এতে রক্তের সুগারের মাত্রা নেমে যায়। এভাবে হঠাৎ হঠাৎ রক্তে সুগারের মাত্রার তারতম্য হওয়ার কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।
খুব জোরে আওয়াজের কারণেও মাইগ্রেনের সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। প্রচণ্ড জোরে আওয়াজের কারণে প্রায় দু’দিন টানা মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়ার আশংকা থাকে। এছাড়া ঘুমের অনিয়ম হলে শরীরে খারাপ প্রভাব পড়তে পাড়ে। অনেক সময় ঘুম বেশি বা কম হলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
ব্যথা বেশি হলে প্লাস্টিকের একটি পাত্রে কিছু বরফের টুকরো নিয়ে ব্যথার স্থানে রাখলে এতে মাথাব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। একটানা কম্পিউটার বা টিভির সামনে থাকবেন না। অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ করবেন না।
ভিটামিন বি-২ এর পরিমাণ শরীরে বৃদ্ধি পেলে মাইগ্রেনের ব্যথা কম হয়। মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত খাদ্য, চিজ, বাদামে ভিটামিন বি-২ এর পরিমাণ বেশি মাত্রায় থাকে।
মানসিক চাপ কমাতে হবে। মস্তিষ্কের বিশ্রামের জন্য প্রয়োজনে মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম করতে পারেন। মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও আদা কুচি ও লেবু দিয়ে চা খেলেও ব্যথার পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে