অর্থনৈতিক সংস্কার ও প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরার পদত্যাগ দাবিতে ল্যাতিন আমেরিকার দেশ চিলিতে বিক্ষোভ চলছেই। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই অসন্তোষ চিলিবাসীর। সেই অসন্তোষের আগুণে ঘি ঢেলে দেয় মেট্রোরেলের ভাড়া বৃদ্ধি। গত ৬ অক্টোবর সরকার মেট্রোরেলের ভাড়া ৮০০ পেসো থেকে বাড়িয়ে ৮৩১ পেসো করার ঘোষণা দিলে বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে গোটা চিলির মানুষ।
এএফপি তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবারের বিক্ষোভে দশ লক্ষাধিক মানুষ যোগ দিয়েছেন। দেশটিতে গত সপ্তাহে শুরু হওয়া বিক্ষোভে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান এক টুইট বার্তায় বিক্ষোভ সম্পর্কে নিজের অবস্থান জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনারা কি বার্তা দিতে চাচ্ছেন আমি তা বুঝতে পেরেছি।’ তার এমন ঘোষণাকে পরিবর্তনের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বলছেন বিশ্লেষকরা।
বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা সঙ্গে নিয়ে ১৯৭৩-৯০ দশকের স্বৈরশাসক অগাস্টো পিনোচেটের সময়কার একটি জনপ্রিয় প্রতিবাদী গান গাচ্ছেন। ল্যাতিন আমেরিকার সবচেয়ে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে পরিচিত চিলিতে এই বিক্ষোভ গত কয়েক দশকের মধ্যে ব্যাপক ও সহিংস আকার ধারণ করেছে।
চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোর গভর্নর কার্লা রুবিলা এক টুইট বার্তায় এই দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে অভিহিত করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, এমন বিক্ষোভ একটি চিলির জন্ম দেবে।
সান্তিয়াগোর গভর্নরের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, গোটা দেশব্যাপী দশ লাখের বেশি মানুষ গতকাল শুক্রবারের বিশাল এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, শুধু রাজধানী সান্তিয়াগোতেই ৮ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোর সংস্কারে দাবিতে প্রতিবাদ জানাতেই এই বিক্ষোভ। অনেকে মনে করেন সরকারের বর্তমান নীতি তাদেরকে পেছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে অল্প বেতন ও পেনশন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যায়বৃদ্ধি এবং ধনী ও গরীবের মধ্যে বৈষম্য তার মধ্যে অন্যতম।
আনন্দবাজার/ইউএসএস