ব্যাংকিং খাতে সার্ভিস চার্জের নামে চলছে নানা অরাজকতা। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিমাণ নির্ধারণ না করায় ইচ্ছেমতো চার্জ আদায় করছে ব্যাংকগুলো। ফলে এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গ্রাহক।
তাই গ্রাহক স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চার্জ নির্ধারণ এবং ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় সকল ধরনের কমিশনের তালিকা টানানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
জানা গেছে, ব্যাংকে জমা রাখা অর্থ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষণ, ঋণ দেওয়া এবং স্থানান্তরে নানা পর্যায়ের সার্ভিস চার্জ আদায় করে থাকে তফসিলি ব্যাংকগুলো। কিন্তু নির্দিষ্টভাবে এসব চার্জের পরিমাণ কত ও আদৌ চার্জ নেওয়া যৌক্তিক কিনা, তার উত্তর জানা নেই কোন গ্রাহকের।
জনতা ব্যাংকের একজন গ্রাহক বলেন, জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখায় তার অ্যাকাউন্ট, আমি বহনের সুবিধার কারণে মতিঝিল ব্রাঞ্চে টাকা জমা দিতে যাবো, ওই ব্রাঞ্চ থেকে এই ব্রাঞ্চে দেয়ার জন্য ৮২৫ টাকা চার্জ দিতে হবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে।
এদিকে সরকারি ব্যাঙ্কের পাশাপাহশি ইচ্ছেমতো চার্জ নিচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোও। সরকারি ব্যাংক ১০ পাতার একটি চেক বইয়ের মূল্য ২৫ টাকা রাখলেও, বেসরকারি ব্যাংক রাখছে প্রায় ১১০ টাকা। একাউন্ট মেইন্টেনিং এ সরকারি ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা নেয়। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকের এ ক্ষেত্রে নেই কোন পরিসীমা। প্রতিটি পর্যায়েই কেটে নেওয়া হয় নানা পরিমাণে কমিশন। এমন স্বেচ্ছাচারি ব্যাপারের পক্ষে মত দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রাইভেট ব্যাংকের এই স্বাধীনতা আছে, এক্ষেত্রে যে আমার যদি মনে হয় আমি চার্জ বেশি নেব। আবার আরেকজন যদি মনে করে লোকবল বেশি আছে আমি চার্জ কম নেব।
চার্জ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বলতার ব্যাপারটি উঠে আসে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নরের বক্তব্যে। তিনি জানান, শুধু পরিমাণ নির্ধারণই নয় পাশাপাশি জোরদার করতে হবে মনিটরিং কার্যক্রমও।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আগে সার্ভিস চার্জের একটা তালিকা করে দিত, কিন্তু বর্তমানে করছে না। এখন ব্যাংকগুলো কি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু সংরক্ষণ করছে। এতে গ্রাহকদের ওপর অনেক বেশি চাপ পড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত নানা ক্ষেত্রের সার্ভিস চার্জের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে