বরিশালে বিসিক শিল্পনগরে বিনিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুশ্চিন্তায় রয়েছে উদ্যোক্তারা। শিল্প নগরীতে গেল এক দশকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেই সাথে এ সকল প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের বাজার ছাপিয়ে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছে।
কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি ও হামলার ঘটনায় উদ্যোক্তারা ব্যাপক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ভয়ে-আতঙ্কে অনেকেই এখন বরিশাল থেকে ব্যবসা অন্য জায়গায় স্থানান্তরের কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে।
শিল্পোদ্যোক্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে তারা বর্তমানে খুবই অতিষ্ঠ। তারা বলেন, গেল ২৪ অক্টোবর দুপুরে শিল্পনগরে এম জে ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক শফিউল আজমকে বেদম মারধর করে সন্ত্রাসীরা। তিনি কাউনিয়া থানায় মামলা করলেও তা নথিভুক্ত করা হয় ২ দিন পর। এমন কি এখনও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এছাড়াও এ ধরণের আরও বহু ঘটনা আছে। কিন্তু অভিযোগ করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আশানুরূপ সহযোগিতা না করায় বর্তমানে উদ্যোক্তারা অসহায়বোধ করছেন। ফলে আতঙ্কিত উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কায় আছেন বলে জানান।
এম জে গ্রুপের মালিক শফিউল আজম জানান, আমার ও অপর এক শিল্পমালিকের ওপর হামলার ঘটনায় বিসিকের সকল শিল্পোদ্যোক্তা উদ্বিগ্ন। ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপত্তা না পেলে এখানে আর কারখানা চালানো অসম্ভব। কারণ, সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ভাবে উদ্যোক্তাদের হেনস্তা করে ও চাঁদা চেয়ে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে।
জানতে চাইলে নগরের কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল জানান, বিসিকে হামলার ঘটনায় এম জে ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকের দেওয়া মামলা ইতোমধ্যে নথিভুক্ত করা হয়েছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া আমরা শিল্প এলাকার নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে সব সময় আন্তরিক।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক শিল্পমালিক অভিযোগ করে জানান, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিসিক এলাকায় এই ভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে, শিল্পমালিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান জানান, করোনায় দেশের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও এখানকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো টিকে আছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী প্রায়ই এখানে হামলা করছে। সন্ত্রাসীরা চাঁদার দাবিতে পরিকল্পিতভাবে হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। সেই সাথে শিল্পনগরের চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রমে ব্যাহত করছে।
জানতে চাইলে বরিশাল বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক জালিস মাহমুদ, সকল উদ্যোক্তার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে আমরা কাজ করছি। সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হলে বিসিক এলাকা নিরাপদ হবে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে