দিনাজপুরের হিলিতে চলতি বছরের মৌসুমে আমন ধানক্ষেতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ইঁদুরের আক্রমণ। ক্ষেতের সকল ধানের গাছ ইঁদুরে কেটে শেষ করে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা নানা ধরনের ওষুধ প্রয়োগ থেকে শুরু করে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না ইঁদুরের উপদ্রব। ফলে এতে ধানের ফলন ব্যাপক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, হাকিমপুর উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন, আলিহাট ইউনিয়ন, বো য়ালদাড় ইউনিয়ন, পৌরসভার প্রায় সকল এলাকায়ই ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা নানা ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে ইঁদুর দমনের চেষ্টা তেমন কোন ফল পাচ্ছেন না তারা।
হিলির জালালপুর গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, গত বছর বোরো মৌসুমে ধানের ভালো মূল্য পাওয়ায় ও করোনাকালীন সময়ে পরিবারের চালের চাহিদা মেটাতে এবছর আমন চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন সব কৃষকরা। সে আশায় উপজেলার নানা এলাকায় চলতি মৌসুমে আমন ধান রোপণ করেন কৃষক। কিন্তু কৃষকের সেই স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে ইঁদুরের আক্রমনে ।
এই বিষয়ে কৃষকরা জানান, ইঁদুর যেভাবে ধান কেটে নষ্ট করে ফেলছে, এতে চলতি বছর ধান আবাদ করে লাভ তো দূরে থাকল, উৎপাদন খরচই উঠবে না। তাই লোকসান ছাড়া আর কিছুই হবে না আমাদের। আমরা জমিতে যে পরিমাণে খরচ করেছি, সেই খরচ ওঠানোই অসম্ভব হয়ে পড়বে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন জানান, চলতি বছর আমন মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ৮ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে,তবে ফসলের বর্তমান অবস্থা ভালো। কিন্তু কোথাও কোথাও ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ইঁদুর দমনে আমরা কৃষকদের সকল পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। নানা ধরনের পদ্ধতি একসাথে সমন্বয় করে ইঁদুর দমনের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে বাঁশের তৈরি যে প্রচলিত ফাঁদ, বিষফাঁদ, ধানের জমিতে কলাগাছ পুতে দেয়া। এতে জমিতে পেচা রাতের বেলা পেচা বসে ইঁদুর ধরে খাবে, তাতে কিছুটা ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ হবে। আমরা আশা করছি, ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে