নারী উন্নয়নে সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষিত নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে দেশের ব্যবসা খাতে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতির কারণে ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া নারীরা শিল্পায়ন ও ব্যবসায় অধিকহারে সম্পৃক্ত হচ্ছেন।
একই সময়ে একজন নারী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পথে সামাজিক ও পারিবারিক সমর্থনও আগের চেয়ে অনেক জোরদার হয়েছে। ব্যবসায়িক ঋণ গ্রহণে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সহায়তা পাচ্ছেন এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে তারা অনেক এগিয়ে গেছেন।
গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, ২০০৯ সালে গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে শিক্ষিত ২০ শতাংশ নারী ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে ২৬ শতাংশে পৌছেছে। এছাড়া ২০০৯ সালে ৪২ শতাংশ নারীকে পারিবারিকভাবে ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে নিরুৎসাহিত করা হতো। ২০১৭ সালে তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
২০০৯ সালে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ২৮ শতাংশ নারীকে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করতে হয়েছে। ২০১৭ সালে এটি ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ট্যাক্স দিতেন, যা ২০১৭ সালে ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
পাশাপাশি ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ব্যবসার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করতেন, যা ২০১৭ সালের বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ সবই দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে গবেষণার ফলাফলে পাওয়া গেছে।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং তাদের বাদ দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বিবেচনায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী কার্যকর গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন।
নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যার সমাধান করছে। নারীদের নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের বড় ধরনের গবেষণা চালালে শিল্প মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, জাতি গঠনে নারীদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। দেশের নারী জনগোষ্ঠি তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেশের নারীরা বিভিন্ন পেশায় যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আগামী দশ বছর পর নারীদের আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ থাকবে না।
দেশের জনগণের ক্রয় ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি দেশিয় বাজারের বিপুল চাহিদা মেটাতে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে নারী উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
আনন্দবাজার/খলিফা