করোনা মহামারির কথা চিন্তা করে আইপিওর আবেদন আপাতত ৩ মাস বন্ধ রাখা এবং পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে অতিদ্রুত ‘বাইব্যাক আইন’ পাসসহ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে ১৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।
আজ (১৯ অক্টোবর) সোমবার বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সাথে বৈঠকে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।
এ সময় বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন শামীম এবং সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ওমর শরীফ শুভ উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক শেষে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, বিএসইসি চেয়ারম্যান আমাদের দাবিগুলো পড়ে দেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। এসব দাবির মধ্যে অধিকাংশ দাবি নিয়ে তিনি কাজ করছেন। বাদবাকি দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। পুঁজিবাজারকে গতিশীল রাখতে এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে তিনি কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।
কাজী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ২০১০ সাল থেকে শুরু ২০২০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পুঁজিবাজারে যে মহাধস নেমে এসেছিল সেই ধসের কারণে বহু বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে এবং অনেকে আত্মহত্যা করেছে। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যোগ্য নেতৃত্বের কারণে পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের ১৯ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
করোনাকালীন আইপিওর আবেদন ৩ মাস বন্ধ রাখতে হবে। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে অতিদ্রুত ‘বাইব্যাক আইন’ পাস করতে হবে। কোনো কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ভালো থাকা সত্ত্বেও, সে কোম্পানির শেয়ার দর যদি অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়, তাহলে ওই কোম্পানিকে রিজার্ভ থেকে অবশ্যই শেয়ার বাইব্যাক করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদেয় ঐতিহাসিক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারের পতন রোধে ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে এবং দশ টাকার নিচে বা ফেস ভ্যালুর নিচের প্রত্যেকটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ভ্যালু ন্যূনতম দশ টাকায় নির্ধারণ করতে হবে।
হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশিত কোম্পানি আইনের ২সিসি ধারা মোতাবেক শেয়ার বাজারের লিস্টেড প্রতিটি কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে এবং এককভাবে পরিচালককে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
স্বল্পমূলধনী ও দুর্বল কোম্পানিকে আইপিও অনুমোদন দেওয়া যাবে না। ওই কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে তাদের পরিশোধিত মূলধন কম পক্ষে ২০০ কোটি টাকা হতে হবে।
যেসব অডিটর, ইস্যু ম্যানেজার, আন্ডার রাইটার, অ্যা সেট ভ্যালুয়েশন কোম্পানি, স্পন্সর মিথ্যা তথ্য দিয়ে আইপিও অনুমোদনে সহায়তা করে বিনিয়োগকারীদের কষ্টার্জিত অর্থ লুটপাট করেছে তাদের ৩ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও আরও অনেক দাবি রয়েছে যেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস
