ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপানে দ্বিতীয়বার রফতানি হচ্ছে ওলকচুর চিপস!

প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালে জাপানে রফতানি হয়েছিল এক টন ওলকচুর চিপস। দেশে উৎপাদিত পণ্যটির মান ভালো হওয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো দেশটিতে আরো এক টন এ চিপস রফতানি করা হয়।

গত ৬ জুন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে জাপানের ওসাকায় অবস্থিত এশিয়া পার্টনারশিপ কোম্পানি লিমিটেডের কাছে চিপসগুলো রফতানি করে ঢাকার সিএনএফ এজেন্ট দাই ইচি ইন্টারন্যাশনাল।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, দেশে উৎপাদিত ওলকচুর চিপস জাপানে রফতানির মধ্য দিয়ে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে। জাপানিদের কাছে খাদ্যপণ্যটি বেশ জনপ্রিয়।

এছাড়া ওলকচুর চিপসের চাহিদা রয়েছে এশিয়া ও ইউরোপসহ বিশ্বের আরো অনেক দেশে। ফলে জাপানের মতো অন্য দেশের বাজার ধরতে পারলে ওলকচুর চিপস দেশের রফতানি বাণিজ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

মূলত পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ওলকচু সংগ্রহের পর ঢাকায় এ চিপস তৈরি করে। পরিপক্ব ওলকচু পরিষ্কার করে খোসা ছড়ানো হয়। এরপর পাতলা করে কেটে গরম বাতাসে শুকিয়ে তৈরি করা হয় চিপস। প্রতি পাঁচ কেজি কাঁচা ওলকচু থেকে চিপস পাওয়া যায় এক কেজির কিছু বেশি।

উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের (চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর) তথ্য অনুসারে, পরপর দুই বছর জাপানের ওসাকায় ওলকচুর চিপস রফতানি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তারা আরো চিপস নিতে আগ্রহী।

দাই ইচি ইন্টারন্যাশনালের কর্তাব্যক্তিরা জানান, বাংলাদেশ থেকে যে ওলকচুর চিপস রফতানি করা হচ্ছে, তার কেজিপ্রতি দাম পড়ছে ৩ মার্কিন ডলার (প্রায় ২৫০ টাকা)।

অথচ জাপানে উৎপাদিত ওলকচু চিপস দেশটিতে বিক্রি হয় ৪-৫ মার্কিন ডলারে। ফলে ভালো মান ও তুলনামূলক কম দামের কারণে জাপানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পরিমাণে খাদ্যপণ্যটি আমদানি করতে চাচ্ছেন।

এ চিপস রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নূর হোসেন বলেন, জাপানে উৎপাদিত ওলকচু থেকে আমাদের দেশের ওলকচুর চিপস জাপানিরা বেশি পছন্দ করছে। এজন্য আমাদের প্রতিষ্ঠান গত বছরের মতো এ বছরও খাদ্যপণ্যটি রফতানি করছে। জাপানিরা এটি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে থাকেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ওলকচুর চিপস থেকে বানানো খাবার প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, লিপিড, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, কপার, জিংক, ফ্যাটি ও ফলিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ভিটামিনের উৎস। এছাড়া এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ, কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি ও ত্বকের কোমলতা বৃদ্ধিতে কাজ করে।

চট্টগ্রাম উদ্ভিদ অধিদপ্তরের  উপপরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল  বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন স্টেশনের মাধ্যমে শুকনো ওলকচু রফতানি শুরু হয়েছে। দেশে এতদিন ওলকচুর প্রচুর উৎপাদন হলেও রফতানি হতো না। এমনকি দেশেও কৃষিপণ্যটির খুব একটা চাহিদা নেই।

তিনি বলেন, জাপানে রফতানির মাধ্যমে কৃষিপণ্যটির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত বছর এক টন ওলকচুর চিপস জাপানে রফতানি হয়। তবে চলতি অর্থবছর এ রফতানির পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। জাপানের পাশাপাশি অন্য দেশেও পণ্যটির বাজার ধরতে পারলে দেশের রফতানি খাতে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হবে।

 

আনন্দবাজার/খলিফা

সংবাদটি শেয়ার করুন