সম্প্রতি সমুদ্রবন্দর দিয়ে দুটি জাতের পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দিয়েছে ভারত। তবে ওই পথে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে আগ্রহী হন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানি করতে হলে ভারত থেকে না নিয়ে অন্য কোনো দেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী তারা।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত সরকার হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার কারণে ব্যবসায়ীদের ২৫০ ট্রাকের মতো পেঁয়াজ আটকা পড়ে। এতে ১০ হাজার টনের এলসি দেয়া ছিল সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই অবশিষ্ট পেঁয়াজগুলো আন্তর্জাতিক আমদানি-রফতানি নীতি অনুযায়ী রফতানির জন্য ভারতীয় রফতানিকারকদের চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ভারতীয় রফতানিকারকরা সেই পেঁয়াজগুলো রফতানি করতে পারছেন না। সে দেশের সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা স্থলবন্দর দিয়ে কোনো পেঁয়াজ রফতানি করবেন না বলে জানান। এর পরিবর্তে সমুদ্রবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, সম্প্রতি ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সমুদ্রপথে বেঙ্গালুরু রোজ ও কৃষ্ণপুরাম জাতের কিছু পেঁয়াজ রফতানির সিন্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এটি আসলেই একটি বিব্রতকর ব্যাপার। আমরা ভারতীয় রফতানিকারকদের এখনও চাপ দিচ্ছি। আমরা কোনো সমুদ্রবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করতে রাজি নই। আর যদি সমুদ্রবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ নিতেই হয়, তাহলে ভারত থেকে নেব কেন? অন্যান্য দেশে পেঁয়াজের দাম কম রয়েছে। আমরা সমুদ্রবন্দর দিয়ে মিসর, পাকিস্তান, তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খুলেছি, সে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এলসি খুলে রেখেও আমদানি করতে না পারা হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম বলেন, আটকে থাকা পেঁয়াজ রফতানি করতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছি। আমার নিজের দুই হাজার টনের পেঁয়াজের এলসি দেয়া রয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ৫০০ টন পেঁয়াজ রফতানি করেছে তারা। বাঁকি দেড় হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি অবশিষ্ট রয়েছে। আমরা ব্যাংকে বাড়ি-জায়গাজমি বন্ধক রেখে ও ঋণ করে পেঁয়াজের এলসি করেছি। দীর্ঘদিনেও পেঁয়াজ না আসার কারণে ব্যাংক টাকা চাচ্ছে। আমরা চাই দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করে আমাদের যেসব এলসি রয়েছে সেগুলোর পেঁয়াজ যেন তারা রফতানি করে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কারণে হিলি স্থলবন্দরে গাড়ি প্রবেশের সংখ্যা কমে গেছে। এতে বন্দরের যে প্রতিদিনের আয় তা থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, একই সঙ্গে সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস