গরমকালে সারা দেশেই ডাবের বিপুল চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে এর অনেক কদর। ফলে বেশি দামে ডাব বিক্রি হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের চাষীরা গাছ থেকে সব ডাব ছিঁড়ে শূন্য করে ফেলেছেন। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে নারিকেল সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোতে।
চাষীরা জানান, ‘যেখানে একটি ডাব উৎপাদনে সময় লাগে মাত্র দেড় থেকে দুই মাস। সেখানে একটি নারিকেল উৎপাদনে সময় লাগে কমপক্ষে ৪ মাস। আবার দামও কম। তাই এখন সব ডাব নারিকেল হওয়ার আগেই বিক্রি করে দিচ্ছি।’
লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ ডাব যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই ডাবের বাজারমূল্য কমপক্ষে ৭০-৮০ লাখ টাকা।
‘সবুজ ডাব পরিপক্ক নারিকেলে পরিণত হওয়ার পরই সেখান থেকে পাঁচ ধরনের পণ্য তৈরি হয় উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা জানান, গাছেই ডাব বিক্রি হয়ে যাওয়ার কারণে নারিকেলের উৎপাদন কমে গেছে। নারিকেল সংকট দেখা দিয়েছে নারিকেল তেল উৎপাদন শিল্পে। এর সঙ্গে ক্ষতির মুখে পড়েছে নারিকেলজাত পণ্য, যেমন- ছোবড়া শিল্প, মশার কয়েল ফ্যাক্টরি, কোকোডাস্ট এবং মালা শিল্প।’
এরইমধ্যে লক্ষ্মীপুরসহ অন্যান্য অঞ্চলেও উল্লেখিত নারিকেল কেন্দ্রিক ৫টি শিল্পে ব্যাপক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, নারিকেলের অভাবে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বেশ কিছু কারখানা। এর ফলে বেকার হয়ে যেতে পারেন কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারিকেল না পাওয়ায় ইতোমধ্যে রায়পুর উপজেলায় ৮টি ছোবড়া মিল এবং আরও ৩টি নারিকেল প্রসেসিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব মিলের প্রত্যেকটিতে নারী-পুরুষ মিলে প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করতেন। পুরো জেলায় এ রকম মিল রয়েছে ২৩টি।
লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্প নগরীতে ২টি নারিকেল তেল মিল রয়েছে। শিল্প নগরীরর সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার ইসলাম খান জানিয়েছেন, ওই কারখানাগুলো নারিকেলের অভাবে প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস