আমরা সবাই ক্যান্সার রোগ সম্পর্কে অবগত। কিন্তু কোন ক্যান্সারের কী লক্ষণ সেটা কেউই জানি না। ক্যান্সারের কয়েকটি ভাগ আছে। ত্বক, ব্রেন কিংবা রক্তের ক্যান্সার। তবে একেকটির একেক রকম উপসর্গ।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজ়েশনের তথ্য মতে, বিশ্বে মৃত্যুর জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ হচ্ছে ক্যান্সার। বিশ্বে প্রতি ছয় জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় ক্যান্সার হওয়ার জন্য। তবে ক্যান্সারের ধরন যদি বিরল প্রকৃতির হয়, তখন অনেক দিন পর্যন্ত মানুষ বুঝতেই পারেন না, উপসর্গটির গুরুত্ব। তাই লক্ষণগুলো জানা থাকলে খুব দ্রুত সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
আসুন জেনে নিন কোন ক্যান্সারের কী কী উপসর্গ থাকে-
ব্রেন ক্যান্সার
এর প্রধান লক্ষণগুলো হলো মাথাব্যথা, সকালে বমি হওয়া, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দেখা দেয়, চোখ টেরা হয়ে যাওয়া, কানে ভোঁ ভোঁ আওয়াজ হওয়া। আরও গুরুতর সমস্যা হলে হয়তো কোনো অঙ্গ প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে।
থাইরয়েড হরমোনের ক্যান্সার
চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসা, বুক ধড়ফড়ানি বৃদ্ধি পায়, ওজন অনেকটা কমে যাওয়া। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের পাশে প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি থাকে। তাতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে খিদে কমে যায়, বমি হতে থাকে, জ্ঞান হারাতে পারেন রোগী।
ইনসুলিন প্রোডিউসিং টিউমার
প্যানক্রিয়াসে তৈরি হয় ইনসুলিন। তবে কোনো রোগীর হঠাৎ করে সুগারের পরিমাণ কমে যাওয়ার নেপথ্যে এই টিউমার হতে পারে। হয়তো কোনো উপায়ে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, তখন এই টিউমারের সম্ভাবনা খোঁজ করা হয়।
অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ডের ক্যান্সার
এই গ্ল্যান্ড থেকে সৃষ্টি হয় অ্যাড্রিনোকর্টিকল হরমোন। ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকলে এই হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। যার ফলে রক্তচাপ অনেক বেড়ে যায়। এমনকি অনেকের দাড়ি-গোঁফ দেখা যায়।
স্পাইনাল কর্ডের ক্যান্সার
হাত-পা ভেঙে যেতে পারে। ব্যথা হবে, এমনকি হাত-পা প্যারালাইজডও হতে পারে।
পেটের পেছন দিকে টিউমার
যদি পেটের পিছন দিকে টিউমার হয়, তার প্রাথমিক ভাবে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। যদি সেই টিউমার অন্য কোনো অঙ্গের উপরে চাপ সৃষ্টি না করে বা অতিরিক্ত হরমোন উৎপাদনের মতো ঘটনা না ঘটে। তখন চিকিৎসকেরাও তা নির্ধারণ করতে পারেন না। টিউমারের আকার বৃদ্ধি পেলে খিদে কমে যায়, ওজন কমতে থাকে। কিডনির টিউমারও এ ভাবেই অনেক সময়ে ধরা পড়ে।
ব্লাড ক্যান্সার
এই ক্যানসারগুলোরও প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে থাকা, বারবার জ্বর, সংক্রমণ, কালশিটে পড়ে যাওয়া এগুলো রক্তের ক্যান্সারের লক্ষণ।
হিস্টিয়োসাইটোসিস
এটি শিশুদের একটি বিরল প্রজাতির ব্লাড ক্যান্সার। হঠাৎ করে মাথার কোনো একটা স্থান ফুলে ওঠা এর প্রধান লক্ষণ।
তবে পরীক্ষা না করার আগে নিশ্চিতভাবে এই রোগ সম্পর্কে কিছুই বলা যায় না। উপসর্গ আছে মানেই সেটা ক্যান্সার নয়। সেটি অন্য কোনো রোগেরও লক্ষণ হতে পারে। তবে এই উপসর্গগুলো থাকলে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে বুঝে নিতে চেষ্টা কোন ক্যান্সারের সম্ভাবনা আছে কি না।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে