বাংলাদেশে তুলার চাহিদা ব্যাপক। প্রতিবছর দেশে তুলার চাহিদা প্রায় ৭৩-৭৪ লাখ বেল। কিন্তু বর্তমানে দেশে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১ লাখ ৭১ হাজার বেল। ফলে দেশের চাহিদা পূরণ করতে বাকি তুলা আমদানি করতে হয় বিভিন্ন দেশ থেকে।
এ ক্ষেত্রে তুলা আমদানিতে বাংলাদেশের নির্ভরতা ভারতের ওপরই। আমদানি করা তুলার ১৯ শতাংশ বা এক-পঞ্চমাংশ আমদানি করা হয় ভারত থেকে। তবে এই নির্ভরতা কমাতে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে ২০ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড (সিডিবি)।
কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন প্রতিষ্ঠান সিডিবি সূত্র হতে জানা গেছে, মাত্র দুই লাখ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করে এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। সেজন্য হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ১০ বেলে উন্নীত করতে হবে। দেশে গেল ২০১৯-২০ অর্থবছরে হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ছিল ৬ দশমিক ১৫ বেল, যেখানে বিশ্বের শীর্ষ তুলা উৎপাদনকারী দেশগুলোয় হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ১০ বেলের ওপরে।
২০১৯-২০ অর্থবছর দেশে তুলা চাষ করা হয়েছে ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে। ওই মৌসুমে তুলা উৎপাদন করা হয় মাত্র ১ লাখ ৭১ হাজার বেল। সম্প্রতি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হাইব্রিড উন্নত জাতের তুলা উদ্ভাবন এবং চাষের ফলে দেশে তুলা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে চাহিদার তুলনায় উৎপাদনের ঘাটতি থাকায় প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ তুলা আমদানি করতে হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়েছে ৭১ লাখ বেল তুলা। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরটিতে মোট তুলা আমদানির মধ্যে ভারত থেকে ১৯ শতাংশ, মালি থেকে ১৩, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১২, ব্রাজিল ও বেনিন থেকে ১০ শতাংশ করে সংগ্রহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে তুলা চাষ সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহে ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হয়। এরপর থেকেই তুলা গবেষণা, তুলা চাষ সম্প্রসারণ, বীজ উৎপাদন ও বিতরণ প্রভৃতি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে সংস্থাটি। তবে খাদ্য উৎপাদনে কোনো বিঘ্ন না ঘটিয়ে তুলা চাষ সম্প্রসারণের জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড তামাক ও কৃষি বনায়ন জমিতে, লবণাক্ত, চর ও পাহাড়ি এলাকার মতো অপ্রচলিত নানা অঞ্চলে তুলা চাষ সম্প্রসারণ করছে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে