একটানা ঋণ আদায় বন্ধ হওয়ার সময় প্রায় ৯ – ১০ মাস পার হয়ে গেছে কিন্তু বেশির ভাগ মেয়াদি ঋণের গ্রাহকই এ সুযোগে ঋণ পরিশোধ করছেন না। তাই ব্যাংকিং খাতে অস্বাভাবিক হারে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যাংকাররা।
এতে জানুয়ারির পর থেকে হঠাৎ করে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাবে। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলে প্রভিশন সংরক্ষণ করা কষ্ট হবে।
ব্যাংকাররা আশা করেছিলেন, সেপ্টেম্বরের পরে তারা ঋণ আদায় করতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেবেন কিন্তু আরও তিন মাসের সময় দেয়ায় সারাবছরই কোনো কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ না করেই পার পেয়ে যাচ্ছেন। এতে ব্যাংকগুলো চরম বেকায়দায় পড়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসরকারি একটি ব্যাংকের এমডি জানিয়েছেন, ঋণ আদায় না হওয়ায় ব্যাংকের প্রকৃত আয় হচ্ছে না। প্রতি মাসেই পুঞ্জীভূত ঋণের ওপর সুদ বেড়েই যাচ্ছে। এ সুদ হিসাবের খাতায় যোগ করা হচ্ছে। বাস্তবে কোনো আয় হচ্ছে না। এতে সামনে ব্যাংকগুলো দুই ধরনের সমস্যায় পড়বে।
প্রথমত, গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারের কারণে সংশ্লিষ্ট ঋণ খেলাপি করা যাবে না। আর ঋণ খেলাপি করা না গেলে ওই ঋণের ওপর আর্জিত সুদ ব্যাংকের আয় খাতে আনতে কোনো বাধা থাকবে না। এতে অনেক ব্যাংকই প্রকৃত আয় না হলেও কৃত্রিমভাবে আয় দেখানোর সুযোগ পাবে।
দ্বিতীয়ত, প্রকৃত আয় না করে কৃত্রিম আয় দেখাতে গিয়ে সরকারের ৪০ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। কারণ ব্যাংকগুলো মুনাফা দেখালেই তার ওপর করপোরেট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। এতে প্রকৃত মুনাফা না করে কৃত্রিম মুনাফার প্রায় অর্ধেক করপোরেট কর পরিশোধ করতে হলে ব্যাংকের মূলধন আরো কমে যাবে।
শুধু তাই নয়, সাধারণ শেয়ার হোল্ডারদেরকেও মুনাফা বণ্টন করতে হবে। সবমিলে ব্যাংকের মূলধনের ওপর হাত পড়ে যাবে। আবার মুনাফা দেখানো না হলে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা বঞ্চিত হবেন। সবমিলেই উভয় সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে দেশের ব্যাংকিং খাত।
আনন্দবাজার/ইউএসএস