আগাম জাতের আলু চাষাবাদে দুর্গ হিসেবে খ্যাত নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলা। এবছর উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ১শত হেক্টর জমিতে। এ এলাকার বিভিন্ন বিস্তীর্ণ উচুঁ জমিগুলোতে চাষাবাদ করা হয়েছিল আগাম জাতের আউশ ও আমন ধানের চাষ। সেই ধান ঘরে তুলতে না তুলতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা আগাম আলুর বাজার ধরার প্রতিযোগিতায় আগাম আলু চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এজন্য জমিতে হালচাষ, সার প্রয়োগ, বিভিন্ন হিমাগার থেকে উন্নত জাতের আলুর বীজ সংগ্রহ করে আগাম আলু রোপনের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন কৃষকেরা। ইতোমধ্যে একাধিক কৃষক আগাম আলু রোপণ করেন।
আশ্বিনা ভারী বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে আগাম জাতের আলু চাষাবাদ যোগ্য জমি। নষ্ট হয়ে গেছে হাল চাষ। এতে আগাম জাতের আলু রোপন পিছিয়ে গেছে প্রায় দুই সপ্তাহের মত। আর ৪৫/৫০ দিনের মধ্যে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা শহরের বাজার গুলোতে পাওয়া যেত আগাম জাতের নতুন আলু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও সেপ্টেম্বর মাসের গেল সপ্তাহে উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক এজাবুল হক লালবাবু ১০০ শতাংশ জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করেছিলেন। রোপণের দিন থেকে শুরু হয় ভারী বৃষ্টিপাত। এতে তার রোপণকৃত আলুর খেত হাটু পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। পচনের আশঙ্কায় ওই কৃষক রোপন কৃত আলু পানির নিচ থেকে উত্তোলন করে আবারো বাড়িতে সংরক্ষণ করেন।
আগাম আলু চাষবাদের বিষয়ে ওই কৃষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আগাম আলু বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়, লাভ হয় অধিক। যার আলু যত আগে উঠবে সে কৃষক ততবেশি লাভবান হবেন।আগাম আলুর বাজারও পাওয়া যায় ৫০/৬০ টাকার মত। কিন্তু এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগাম আলু চাষাবাদে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছি। এতে আমার হাল চাষ বীজ শ্রমিকসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
একই গ্রামের আলু চাষী বেলাল হোসেন জানান, এবছর আলুর বীজের দাম চড়া, খরচও বেশি। আগাম আলুর বাজার পাওয়ার আশায় ৩০ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করেছিলাম। কিন্তু ভারী বর্ষণের কারণে আলু ফলনের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় রয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেক আগাম আলুচাষী কে আগাম আলু চাষে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তারপরও কিছু চাষী আগাম আলু চাষাবাদ করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
আনন্দবাজার/শাহী/মনন