গত অর্থবছরের পর চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতির দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এবার করোনার থাবা ঘাটতির পারমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দুই মাসেই (জুলাই-অগাস্ট) এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রবিবার রাজস্ব আদায়ের হালনাগাদ যে তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-অগাস্ট) সবমিলিয়ে ৩০ হাজার ১৬২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে ১০ হাজার ৭৮৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঘাটতি হয়েছে। এই দুই মাসে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যের চেয়ে কম হয়েছে ২৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আদায় বেড়েছে মাত্র দশমিক শূন্য ১৬ শতাংশ।
গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় তার আগের বছরের চেয়ে ৫ দশমিক ০৭ শতাংশ বেশি হয়েছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-অগাস্ট সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩০ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে শুল্ক-কর, স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট এবং আয়কর-এই তিন খাত থেকে এনবিআর রাজস্ব আদায় করে থাকে। করোনার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় রাজস্ব আহরণ গতি হারালেও চলতি অর্থ বছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা আগের চেয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যা ‘অবাস্তব’ বলে তখনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের হতাশাজনক চিত্র দেখে গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, রাজস্ব আদায় কম হবে, এটা তো অবধারিতই ছিল। সরকারও জানত কম হবে; এনবিআরের কর্মকর্তারাও জানতেন কম হবে। উচ্চাভিলাষী-অবাস্তব লক্ষ্য ধরলে তো এমন হবেই।
এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, একটি কঠিন সময় পার করছি আমরা। এমন মহামারীর মুখোমুখি কখনোই হইনি আমরা। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে তাই কৌশলী হতে হবে। কোভিড-১৯ এর এই কঠিন পরিস্থিতিতে যে সব খাত ভালো করছে, তাদের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করতে হবে; আর যারা খারাপ করছে তাদের ছাড় দিতে হবে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস